Ajker Patrika

বৈষম্য-দারিদ্র্যের অবসানে নারীর জন্য চাই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৪, ২২: ১০
বৈষম্য-দারিদ্র্যের অবসানে নারীর জন্য চাই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ

উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশ আসীন হলেও পিছিয়ে আছেন নারীরা। অথচ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় নারীর শ্রমশক্তি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। এই শ্রমশক্তির ওপর ভর করেই বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবং বৈষম্য-দারিদ্র্যের অবসানে প্রয়োজন নারীর জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ। 

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ নারী কমিটি ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) মানববন্ধন ও র‍্যালি করে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ নারী কমিটির সদস্য রোজিনা আক্তার সুমি। সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ এর নারী কমিটির আহ্বায়ক রেহানা আক্তার ডলি। 

রেহানা আক্তার ডলি বলেন, পোশাক কারখানায় যারা শ্রমিক, তাদের অধিকাংশই নারী। আর যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তারা বেশির ভাগই পুরুষ। ফলে নারী শ্রমিকেরা নানা ধরনের হয়রানি ও প্রতিকূল পরিবেশের মুখে পড়েন। 

এ ছাড়া নারীকে পোশাক কারখানায় নারী হিসেবে নয়, সস্তা শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন শক্তিশালী করা দরকার, সেই সঙ্গে পোশাকশিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ে কারখানা মালিকদের পাশাপাশি বায়ারদেরও দায়বদ্ধতার আওতায় আনতে হবে। 

এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের জাতীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এসডিজি ৫ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা অর্জন করতে হলে দরিদ্র নারী ও মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনসহ তাঁদের সব অধিকার বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। ২০৩০ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা অর্জনের জন্য বর্তমান বিশ্ব সঠিক পথে এগোচ্ছে না, যার প্রধান কারণ হচ্ছে বাজেট ঘাটতি। 

জেন্ডার সমতা অর্জনের লক্ষ্যে সারা বিশ্বে বাৎসরিক ৩৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট ঘাটতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা আরও নাজুক, এখানে বাজেট ঘাটতি তো থাকেই, পাশাপাশি যতটুকু বরাদ্দ থাকে তা যথাযথভাবে ব্যয় হয় না।পাশাপাশি ব্যয় কতটা কার্যকরভাবে হলো তারও কোনো মনিটরিং নাই। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের জন্য বিনিয়োগ বাড়িয়ে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারসহ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি। 

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশের প্রতিনিধি অরিফুর রহমান, নারী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক নেত্রী সুমাইয়া ইসলাম, সাথী আক্তার, রাশিদা আক্তার, নাজমা আক্তার প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন, পোশাক খাতসহ সব খাতে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা ও সন্তানের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, মজুরিবৈষম্য, ন্যায্য মজুরি, সময়মতো মজুরি প্রদান, চাকরির অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। 

যৌন হয়রানি ও সহিংসতা রোধে ২০০৯-এর নীতিমালাসহ শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে কারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে তদারকিসহ পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে। নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য অফিস পরিবহন ও শ্রমিক সংগঠনে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। নারী শ্রমিকদের শ্রম আইন ও তাঁদের অধিকার বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে জানান তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত