জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ 

জবি সংবাদদাতা 
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৪, ১৮: ৫৯
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৪, ১৯: ০৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে আকতার হোসাইনের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়েছে। 

সম্প্রচারমাধ্যমটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আকতার হোসাইন নিজের ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের এমসিকিউর উত্তর অন্যজনকে দেন। উত্তরপত্রের অধিকাংশই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলে যায়। 

সেই মেসেঞ্জার বার্তায় দেখা যায়, যিনি উত্তর নিচ্ছেন, তিনি আকতারের কাছে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অনুরোধ জানান। জবাবে আকতার সব দিয়েছেন বলে ফিরতি বার্তায় জানায়। সেই সঙ্গে এটি কাউকে না জানানোর অনুরোধও করেন। 

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি মো. ইব্রাহীম ফরাজিকে সভাপতি ও এস এম আকতার হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জবি ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির নেতারা জন্ম দিচ্ছেন নানা বিতর্কের। আড়াই বছর ধরে চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠল মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে। 

জবি শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সহসভাপতি মিঠুন বাড়ৈ এ বিষয়ে বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক আকতার দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতি এবং বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে। 

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাসেল বলেন, ‘ভর্তি-বাণিজ্য, জালিয়াতি, টেন্ডার-বাণিজ্য—এসব তো ছাত্রলীগের উদ্দেশ্য না। যারা এসব করবে, তারা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোক। তারা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এসব অপরাধ করে সংগঠনের সুনাম নষ্ট করছে।’

এদিকে ফেসবুক মেসেঞ্জারের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে একটি অডিও ক্লিপও। আকতারের মামাতো ভাই পরিচয়ে মাদারীপুরের কাকন মিয়া ভর্তি পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টি দেন এক ব্যক্তিকে। 

ওই অডিও ক্লিপে শোনা যায়, কাকন মিয়া নিজেকে আকতারের আপন মামাতো ভাই পরিচয়ে অপর পাশের ব্যক্তিকে পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছেন। 

এ বিষয়ে কথা বলতে কাকন মিয়াকে প্রশ্ন করা হলে যিনি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। এরপর আর কোনো কথা না বলেই ফোন কেটে দেন তিনি। 

তবে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার দাবি করেন আকতার হোসাইন। তিনি বলেন, ‘তাহলে আমার আপন ছোট ভাই তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কথা ছিল। সে প্রাইভেটে পড়ছে কেন? আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। যাচাই-বাছাই চলছে। এরপর দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণমাধ্যমে এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আরও অধিকতর যাছাই-বাছাই করে তারপর মন্তব্য করতে পারব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত