ইসির ঘোষণায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বয়কট

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৪, ২০: ২৯
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ২০: ৪৫

ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অহিদুজ্জামান অহিদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বরের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত হলো।

আজ রোববার বিকেল ৬টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অহিদুজ্জামান।

এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর প্রভাব বিস্তারের চিত্র তুলে ধরেন এবং ‘সংঘাত এড়াতে’ নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। 

তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর।

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২১ মে এ উপজেলার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে অহিদুজ্জামান অহিদ ও মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর মনোনয়ন দাখিল করেন। 

গত ২৩ এপ্রিল যাচাই–বাছাই অনুষ্ঠানে ওয়াদুদ মাতুব্বরের স্ত্রীর নামে লাভজনক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অহিদুজ্জামান। এ সময় ওয়াদুদ মাতুব্বরের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি আপিল করলেও তা খারিজ হয়ে যায়।

এরপর একমাত্র প্রার্থী হিসেবে অহিদুজ্জামানকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা।

ওয়াদুদ মাতুব্বর মনোনয়ন ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন। 

হাইকোর্ট ৫ মে তাঁর রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। পরে ওয়াদুদ মাতুব্বর আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত মনোনয়ন ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন অহিদুজ্জামান। কিন্তু আজ রোববার সে আবেদন খারিজ করে ওয়াদুদ মাতুব্বরের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন আদালত। 

এ ঘটনার পর স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দায়ী করে এবং এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অহিদুজ্জামান অহিদ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, চেয়ারম্যান প্রার্থীর পরিবারের কারও নামে উপজেলা পরিষদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান থাকা যাবে না। কিন্তু ওয়াদুদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী রুমা আক্তার স্বত্বাধিকারী রাতুল এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওয়াদুদ মাতুব্বরের মেয়াদকালীন তাঁর স্ত্রীর লাইসেন্সে ২০২০–২১ এবং ২০২১–২২ অর্থ বছরে উপজেলার উন্নয়ন তহবিল, এডিবি এবং রাজস্ব তহবিলের অনেকগুলো প্রকল্পের কাজ করেছেন। যে কারণে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। 

এরপর আপিল করলেও তাঁর স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্যতা পেয়ে মনোনয়ন বাতিল বহাল রাখেন জেলা প্রশাসক। এরপর প্রত্যাহারের তারিখ পর্যন্ত তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে ১  মে আমাকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে আপিল করলে, আমি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করেছিলাম।

নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে অহিদুজ্জামান বলেন, ‘চেম্বার আদালতে ওয়াদুদ মাতুব্বর রায় পাওয়ার পর তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা এলাকায় যেভাবে ভীতি প্রদর্শন করেছেন, তাতে আমার নেতা–কর্মীরা এলাকায় ভয় পাচ্ছেন। আজ আমি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, আমি যদি নির্বাচন করতে যাই তাহলে এলাকায় দাঙ্গা–হাঙ্গামা বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি, যেকোনো সময় আমার ওপর বড় ধরনে আক্রমণ হতে পারে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করতেছে তাতে আমি নিজেকে এবং নেতা–কর্মীদের নিরাপদে রাখার জন্য নির্বাচন বয়কট করছি এবং সরে দাঁড়াচ্ছি।’
 
এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, ‘এমপি সাহেব ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে কাজ করতেছেন। তাঁর আইনি লড়াইয়েও কাজ করেছেন এবং নেতা–কর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি এমপি সাহেবের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে চাই না। নির্বাচন থেকে আমার সরে দাঁড়ানোর এটিই অন্যতম কারণ।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত