Ajker Patrika

অস্ত্র ও অর্থ পাচারের মামলায় সম্রাটের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ২৯
অস্ত্র ও অর্থ পাচারের মামলায় সম্রাটের জামিন

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ক্যাসিনো সম্রাট নামে পরিচিত ইসমাইল হোসেন সম্রাটকে অস্ত্র ও অর্থ পাচারের মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার দুটি পৃথক আদালত পৃথক দুই মামলায় সম্রাটকে জামিন দেন।  

অস্ত্র আইনের মামলায় ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের সম্রাটকে জামিন দেন। 

২০১৯ সালের অক্টোবরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাঁদের নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া পাওয়া যায়। এ চামড়া রাখার দায়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিনই রাত পৌনে ৯টার দিকে সম্রাটকে কারাগারে নেওয়া হয়। 

পরদিন ৭ অক্টোবর বিকেলে র‍্যাব-১-এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় দুটি মামলা করেন। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় সম্রাটকে একমাত্র আসামি করা হয়। মাদক মামলায় সম্রাট ও আরমানকে আসামি করা হয়।

অস্ত্র মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা র‍্যাব-১-এর উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। 

অর্থ পাচার মামলা: 

সম্রাটকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সন্ধান পায় সম্রাট ও তাঁর সহযোগী আরমান বিপুল পরিমাণ টাকা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে পাচার করেছেন। সিআইডি অনুসন্ধান করে দেখতে পায়, অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা করে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। 

অবৈধভাবে এই পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করে সিআইডি। সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম বিভাগের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের উপপরিদর্শক রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় এই মামলা করেন। 

মামলাটির তদন্ত করেন সিআইডির পরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ। দীর্ঘদিন পর এই মামলায় সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সপ্তাহে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। 

রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য সম্রাটকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়। এদিকে সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। 

শুনানির সময় আইনজীবী আদালতকে বলেন, সম্রাটকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য যে আবেদন করা হয়েছে, তার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। সম্রাট গুরুতর অসুস্থ। ২২ বছর আগে তাঁর ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছে। হার্টের দুটি বাল্ব নষ্ট। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার হয়ে এ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মেহেদী মাসুদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেন, মামলার তদন্তের অগ্রগতি কত দূর। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অর্থ পাচারের বিষয়ে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, এই মামলায় এজাহার ছাড়া অর্থ পাচার প্রমাণের সপক্ষে অন্য কোনো কাগজপত্র নেই। 

এই পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আজাদ রহমান জামিনের বিরোধিতা করে রিমান্ডে দেওয়ার আবেদন জানান। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং ১০ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন। 

তবে দুই মামলায় জামিন মিললেও সম্রাট এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্য দুটি মামলায় শিগগিরই জামিনের আবেদন করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

একাত্তর ও এক-এগারোর সময় বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন নীতি ভুল ছিল: ড্যানিলোভিচ

সীতাকুণ্ডে সৈকতে বন্ধুকে বেঁধে রেখে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত