Ajker Patrika

ঈদের আগে বেতন-ভাতা অনিশ্চিত ১৭০০ শ্রমিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

‘এক বছরের বেশি সময় ধরে গ্রামের বাড়ি যাই না। তাই আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলাম, এবারের ঈদ বাড়ি গিয়ে মা ও ভাইবোনদের সঙ্গে উদ্‌যাপন করব। কিন্তু বেতন ও বোনাস না পাওয়ায় সেই আশা আর পূরণ হচ্ছে না।’

আজ শনিবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার পোশাক কারখানা ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিক জেসমিন আক্তার।

জেসমিন জানান, আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়া গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁদের কারখানাটি লে-অফ (বন্ধ) ঘোষণা করা হয়। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতনসহ ঈদের বোনাস ২৫ মার্চ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই দিন ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ দিনের বেতন দিয়ে শ্রমিকদের আর কোনো টাকা-পয়সা দেয়নি। টাকা না পেয়ে জেসমিন দোকানের বকেয়া ও ঘরভাড়া দিতে পারেননি। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও ঈদে তাঁর গ্রামের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না।

এ নিয়ে কথা হলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন জানান, কারখানাটিতে ১ হাজার ৭০০ শ্রমিক রয়েছেন। এসব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ না করে কারখানাটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় শ্রমিক, মালিকপক্ষসহ বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে ১৭ মার্চ সভা হয়। এতে ২৫ মার্চ শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারিসহ ১৫ মার্চ পর্যন্ত বেতন ও ঈদের বোনাস দেওয়ার বিষয়ে লিখিত চুক্তি হয়। কিন্তু ২৫ মার্চ শুধু ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ দিনের বেতন দেওয়া হয়।

রফিকুল বলেন, ঈদের বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা গতকাল শুক্রবার থেকে কারখানার সামনে গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু মালিকপক্ষ চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিকদের দাবি পূরণে কোনো রকম আন্তরিকতা দেখাচ্ছে না।

কারখানার সামনে অবস্থান করা শ্রমিক শিল্পী আক্তার বলেন, ‘বেতন ও বোনাস না পাওয়ার কারণে ঈদের কেনাকাটা দূরের কথা, গত মাসের বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও মুদিদোকানের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। এবারের ঈদে সন্তানদের পাতে কোনো ভালো খাবারও দিতে পারব না। বেতন ও বোনাসের জন্য গতকাল সারা দিন আমরা কারখানার সামনে ছিলাম। রাতও বসে কাটিয়েছি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী আছে। আজও বেতন ও বোনাসের কোনো খবর নাই।’

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ মাল বিক্রি করে শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের লোকজনও আছে। দেখা যাক কী হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত