রাজধানীর রমনা ও পল্টন মডেল থানায় দায়ের করা আরও দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে  জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এই আদেশ দেন।

গত বৃহস্পতিবার দুই থানার চার মামলায় আমীর খসরুকে জামিন দেওয়া হয়। ওই দিন চার মামলার মূল নথি মহানগর দায়রা জজ আদালতে অন্য আসামির জামিন শুনানির জন্য থাকায় শুনানি হয়নি। আদালত আজ দিন ধার্য করেন।

খসরুর পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান, মহসীন মিয়া, আব্দুল লতিফ তালুকদার, ইকবাল হোসেন, ওমর ফারুক ফারুকী ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহ শুনানি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. নুরুল মুত্তাকিন ও হাসান রাশেদ পরাগ জামিনের বিরোধিতা করেন।

এ সময় খসরুর পক্ষে আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আসামি ৭৬ বছর বয়স্ক। বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি সাবেক মন্ত্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি মর্যাদাসম্পন্ন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। জামিনে মুক্তি দিলে তিনি পালাবেন না। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে দুই মামলা জামিন দেন। বাকি দুই মামলায় অধিকতর জামিন শুনানির জন্য ২৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।

তাঁর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বিষয়গুলো নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার চারটি মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ দুই মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে। আর দুই মামলায় জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এর আগের দিন আরও দুই মামলায় জামিন দেওয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নাশকতার যে মামলাগুলো হয়েছিল, তার মধ্যে ১০টি মামলায় আমীর খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ পর্যন্ত ৮ মামলায় জামিন পেয়েছেন খসরু।

১৪ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী এই দিন ধার্য করেন। ওই দিন আট মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন ও জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। পরে আদালত শুনানির জন্য গত বুধবার তারিখ ধার্য করেন। বুধবার আবার শুনানি পিছিয়ে বৃহস্পতিবার তারিখ ধার্য করেন। বৃহস্পতিবার চার মামলায় জামিন দেওয়ার পর বাকি চার মামলার শুনানি পিছিয়ে আবার রোববার দিন ধার্য করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবরের বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় আমীর খসরুর বিরুদ্ধে মোট ১০টি মামলা হয়। পরে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। খসরুর আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পড়ে আট মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
 
এর আগে পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ৩ নভেম্বর আমীর খসরুকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলায় তাঁর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ১০ নভেম্বর আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পল্টন থানার নাশকতার আরেক মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এই ৮টি মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এর আগে জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু মামলাগুলোয় রাষ্ট্রপক্ষ গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন না করায় জামিন আবেদন ফেরত দেওয়া হয়। পরে আমীর খসরুর পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবারে হাইকোর্ট আমীর খসরুর জামিন আবেদন নিষ্পত্তের নির্দেশ দেন নিম্ন আদালতকে।