Ajker Patrika

এক ব্যারিস্টারের নির্দেশে তরুণীকে ধর্ষণ ও শিকলে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও পাঠাত বিদেশে  

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ৪৬
এক ব্যারিস্টারের নির্দেশে তরুণীকে ধর্ষণ ও শিকলে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও পাঠাত বিদেশে  

রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের একটি ভবন থেকে শিকলবন্দী অবস্থায় এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তরুণীকে বন্দী অবস্থায় ধর্ষণ, নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই চারজনই কেবল এর সঙ্গে জড়িত নয়। এসব ভিডিও বিদেশে থাকা এক ব্যারিস্টারের কাছে পাঠানো হতো। যিনি এগুলো বাণিজ্যিক পর্নোগ্রাফি সাইটে বিক্রি করতে পারেন বলে পুলিশের আশঙ্কা। এই পুরো চক্রের নেপথ্যে রয়েছেন সেই ব্যারিস্টার। তাঁর নাম ব্যারিস্টার মাসুদ। তাঁকে খুঁজছে পুলিশ।

আজ সোমবার ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক এ কথা জানান।

৮ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ের একটি বহুতল ভবনে এক তরুণীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শিকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীকালে ৩১ মার্চ রাতে ওই তরুণী ফ্ল্যাটে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে পথচারীরা জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ ফোন দেন। এরপর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই তরুণীকে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই দিনে মোহাম্মদপুর থানায় তরুণী বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। তাঁরা হলো সালমা আক্তার ওরফে ঝুমুর, সান, হিমেল ও রকি।

ডিসি আজিমুল হক বলেন, ‘পুরো ঘটনা নেপথ্যে রয়েছেন একজন ব্যারিস্টার। যিনি এই তরুণীকে ব্ল্যাকমেল করেছেন এবং তাঁর সঙ্গে লিভ টুগেদার করেছেন। তাঁর বিস্তারিত তথ্য আমরা খুঁজছি। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। দেশে থাকলে তাঁকে আমরা গ্রেপ্তার করব, দেশের বাইরে থাকলে ইন্টারপোলের সহায়তা নেব।’

পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর মেজো দুলাভাইয়ের মাধ্যমে একজন ব্যারিস্টারের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর সেই ব্যারিস্টারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় তরুণীর। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ওই ব্যারিস্টার তরুণীকে বাসা ভাড়া করে দিতেন। সেখানে একাধিক গৃহপরিচারিকা নিয়ে থাকতেন তরুণী। সব খরচ ওই ব্যারিস্টার দিতেন। ব্যারিস্টার বেশির ভাগ সময় বিদেশে থাকতেন, দেশে এলে এই তরুণীর বাসায় উঠতেন ৷ সর্বশেষ মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ের ১৬ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া করে দেন। সেখানে এই তরুণী সালমা ওরফে ঝুমুর নামে এক গৃহপরিচারিকাসহ থাকতেন। তাঁদের দেখাশোনার জন্য সান, হিমেল ও রকি নামে তিন তরুণকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ব্যারিস্টার। তবে ব্যারিস্টার দেশের বাইরে থাকায় এই তরুণী সানের সঙ্গে বেড়াতে যেতেন। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। নবীনগরের বাসায় তাঁদের নিয়মিত আড্ডা হতো।

বিষয়টি গৃহপরিচারিকা সালমা ব্যারিস্টার জানান, এতে ব্যারিস্টার ক্ষিপ্ত হন। সান রকি ও হিমেলকে বাসায় আসতেন নিষেধ করেন। তবে এতে এই তরুণী আরও ক্ষিপ্ত হন। এরপর ব্যারিস্টার ওই তরুণীকে দিয়ে পর্নোগ্রাফি বানানোর নির্দেশ দেন, সেগুলোর ভিডিও ধারণ করতেন সালমা, সেই ভিডিও নিয়মিত ব্যারিস্টারকে পাঠানো হতো।

আজিমুল হক বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে নির্যাতনের বেশির ভাগ ভিডিও ও ছবি সালমার মোবাইল ফোনে । কিন্তু তিনি মোবাইলটি লুকিয়ে ফেলেছেন। সেটি পেলে পৈশাচিক নির্যাতনের আসল তথ্য ও ভিডিওর গন্তব্য সম্পর্কে জানা যাবে।

ডিসি বলেন, ‘যেসব ভিডিও ব্যারিস্টারকে পাঠানো হয়েছে, এগুলো পর্নোগ্রাফি সাইটে বিক্রি হয়ে যেতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। কারণ, ভিডিও ধারণ এবং পাঠানোর কৌশল তা-ই বলছে।’

এদিকে আজ নবীনগর হাউজিংয়ের সে বাড়িটিতে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের চারতলার ফ্ল্যাটটিতে তালা দেওয়া। আশপাশের লোকজন জানিয়েছে, গতকাল রাতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। বাসাটিতে নারী-পুরুষের আড্ডা হতো প্রায়। তবে এত বড় অপরাধ হচ্ছে তা টের পান নাই পাশের ফ্ল্যাটের কেউ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত