আড়াইহাজারে একাধিক কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোটদান, গোপন কক্ষে প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৪, ১৪: ৩৬
আপডেট : ২১ মে ২০২৪, ১৫: ২৯

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রকাশ্যে ভোট, জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা, গোপন বুথে পোলিং এজেন্টের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে গেলে একাধিক প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা এসব অভিযোগ করেন। সংসদ সদস্য সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সকাল ৯টায় উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের সেন্ট্রাল করোনেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে দেখা যায় ৩ ও ৪ নম্বর বুথে ঘোড়া প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ইমরান হোসেন ও বাদল ভোটারদের পাশে দাঁড়িয়ে নজরদারি করছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি ও ছবি তুলতে দেখে সরে যান উভয়েই। এ নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সেখানে নারী ও পুরুষ উভয় কেন্দ্রেই ছিলের ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের পোলিং এজেন্ট। কিন্তু ঘোড়া প্রতীকের প্রধান প্রতিপক্ষ দোয়াত-কলম প্রতীকের কোনো এজেন্ট ছিলেন না কোনো কক্ষে। প্রার্থী শাহজালালের অভিযোগ, আগের রাতে ভয়ভীতি দেখানো হলে তাঁর পোলিং এজেন্ট হতে কেউ রাজি হননি। 

সকাল পৌনে ১০টার দিকে ৯৮ নম্বর দড়ি সত্যভান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথে গোপন কক্ষে নজরদারি করতে দেখা যায় আনারস প্রতীকের পোলিং এজেন্ট সাইফুল ইসলামকে। ছবি তুলতে দেখেই দ্রুত তিনি সরে যান। পরে প্রিসাইডিং অফিসারকে জানানো হলে তিনি তাঁকে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করতে থাকেন।

আরেক কক্ষে প্রকাশ্যে ঘোড়া প্রতীকে ভোট দিতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। ভোট দেওয়ার পর আবার লাইনে দাঁড়ান তিনি। এ সময় আঙুলে দাগ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন এবং পরে প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় পালিয়ে যান।

এসব বিষয়ে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি আমার কাজ করছি। কিন্তু আমি একদিকে গেলে ওরা আরেক দিক থেকে প্রবেশ করে। যা ঘটেছে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এমনটা আর হবে না।’

ঘটনার পর কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পথে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদা মোশাররফের নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ঘিরে ধরেন ঘোড়া প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করতে থাকেন এবং গাড়ি আটকে রাখেন। একপর্যায়ে তাঁর এক সমর্থক টাকা দিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করতে থাকেন।

দুপ্তারা ইউনিয়নের মতো উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নেও এসব হচ্ছে দাবি করে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী শাহজালাল মিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট, কেন্দ্র দখল করা হচ্ছে। আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে বললে বলে আমরা দেখছি। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না। আমি ফলাফল পর্যন্ত দেখব। নির্বাচনের মাঠ ছাড়ব না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে এবং আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত