কিশোরগঞ্জ-১: সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলের মনোনয়নপত্র বাতিল

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ০০
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ৩৩

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে (সদর-হোসেনপুর) স্বতন্ত্র প্রার্থী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরিত তালিকায় গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। 

সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে। কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হয় আজ। এদিন এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের সমর্থনকারীর মধ্যে মৃত ব্যক্তির পক্ষে তাঁর ছেলে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন। যাচাই-বাছাই কমিটি এটি আমলে নিয়ে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন। 

এ বিষয়ে সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘অদৃশ্য কারণে আমার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। আমি আপিল করব।’ 

এ ছাড়া এই আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস দল থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে দল থেকে মনোনয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। 

অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ সাদীর সমর্থনকারীর মধ্যে ছয়জনের তথ্য ভুল থাকায় তাঁরও মনোনয়নপত্রটিও বাতিল হয়। এ ছাড়া এই আসনে তিনজন প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা এবং সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন ও ঋণখেলাপি থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করেন যাচাই-বাছাই কমিটি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই বলছে আমি আওয়ামী লীগের দালাল। আমি যে সরকারের দালালি করতে আসেনি—এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে।’

এ ছাড়া হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করায় গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী আশরাফ আলী এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আহসান উল্লাহর প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। 

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের সমর্থনকারীর মধ্যে ৯ জন সমর্থন না করায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, ‘একটা পক্ষ ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার পক্ষে স্বাক্ষর করা ৯ জনকে আমার বিপক্ষে বলিয়েছেন। আমি আপিল করব।’ 

এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রুবেল মিয়ার সমর্থনকারীর মধ্যে একজনের স্বাক্ষর না মিলায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঁইয়ার সমর্থনকারীর ছয়জনের স্বাক্ষর আছে; কিন্তু সমর্থন করেন নাই বিধায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এদিকে এই আসনে দুজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। 

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের (১, ২ ও ৩) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়। এই তিনটি আসনে মোট ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও পাঁচজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন কারণে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল এবং পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। যাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল ও স্থগিত হয়েছে, তাঁদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত