Ajker Patrika

বৈশাখী চরকির ঘূর্ণিতে শৈশবে ফেরা

নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
বৈশাখী চরকির ঘূর্ণিতে শৈশবে ফেরা

বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান শেষে জনতার স্রোত রমনার বটমূল থেকে বেরিয়ে শাহবাগের সড়ক ধরে ছুটছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার দিকে। রমনা গেট দিয়ে বের হয়ে শাহবাগের দিকে একটু এগোতেই শেখ জামাল জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স। এখানে এসে এই জনস্রোত কিছুটা ভেঙে ছোটখাটো একটা জটলায় পরিণত হয়। জনা তিরিশেক মানুষ গোল হয়ে কিছু একটা করছে। দূর থেকে সেটা বোঝা গেল না। একটু মনোযোগী হয়ে তাকাতেই জটলায় থাকা মানুষজনের মাথার ওপরে আটকে গেল চোখ। মাঝখানে থাকা একজনের কাঁধে রাখা খড়ের গাদায় কয়েক শ রঙিন চরকি গাঁথা। মূলত এই চরকি ঘিরেই এমন জটলা। 

এই জটলায় যেমন আছে শিশু-কিশোর, তেমন আছে নববিবাহিত দম্পতি, মাঝবয়সী ও বৃদ্ধরাও। চরকিকে ঘিরে সবারই উচ্ছ্বাস উদ্দীপনাই যেন সমান। 

ছেলে, ছেলের বউ, আর নাতিসহ ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব ইমাম হোসেন। সেখান থেকেই চারুকলার দিকে যেতেই চোখ পড়ে এই চরকিগুলোর দিকে। ব্যাপক আগ্রহের সঙ্গে আট বছরের নাতি আবিরকে নিয়ে জটলা ঠেলে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তিনি ৷ উদ্দেশ্য নাতিকে একটা চরকি কিনে দেওয়া। চরকি কেনার জন্য রীতিমতো তাঁকে ভিড় ঠেলে ঢাকার লোকাল বাসে ওঠার মতো কসরত করতে হলো। 

চরকি হাতে এক শিশুএরই এক ফাঁকে কথা হয় ইমাম হোসেনের সঙ্গে। ১০০ টাকায় সব থেকে বড় চরকিটা কিনে নাতির হাতে তুলে দিতে দিতে তিনি বললেন, ‘চরকি ছাড়া আমাদের ছোটবেলার বৈশাখ বা বৈশাখী মেলা কল্পনাই করা যেত না। বাঁশের চিকন কাঠির হাতলে, পাতলা রঙিন কাগজে ফুলের মতো আকৃতি দিয়ে, কাগজের গুচ্ছের মাথায় শুকনো কচুরির ডাল সেঁটে বানানো হতো চরকি। গ্রামীণ মেলাগুলোতে ছোট বাচ্চাদের সব থেকে আগ্রহের বস্তু ছিল এই চরকি। আমরা ছোটরা বাবা, চাচা বা বড় ভাইয়ের সঙ্গে মেলায় গেলে এই চরকি কেনার বায়না থাকত সবার আগে। কিনে না দিলে কান্নাকাটি করে মেলা মাথায় তুলে নিতাম।’ 

শৈশবের স্মৃতি স্মরণ করে ইমাম হোসেন বলেন, কাঁঠাল পাতা ছিঁড়ে পাটকাঠির মাথায় লাগিয়ে বৈশাখী বাতাসে ধরলেই সেটা ঘুরতো ফিনফিন করে। দুটি খেজুরের পাতা আড়াআড়ি করে মাঝে আরেক খেজুরের পাতা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে সেটা বাতাসে ধরলেও হতো চমৎকার চরকি। বাতাস না থাকলে এই দুই চরকি হাতে ধরে ভোঁদৌড় দিলেও ঘুরত চরকি। দৌড় যত গতিতে হতো, চরকি তত জোরে ঘুরত। এ যেন শরীরের শক্তিতে কেনা নির্মল আনন্দ। 

আরও কিছু স্মৃতির ঝাঁপি খোলার আগেই ওপাশ থেকে ছেলে আর ছেলের বউয়ের তাগাদা, এবার যাওয়ার পালা। যাওয়ার আগে ইমাম বলেন, ‘আমাদের শৈশবটার সঙ্গে আমার নাতির শৈশবের কোনো মিল নেই। ওরা বেড়ে উঠছে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিবেশে। তাই আমি ইচ্ছে করেই ওকে চরকি কিনে দিলাম। বাপ-দাদাদের শৈশবের কিছুটা ছোঁয়া হলেও পাক। চরকি হাতে বেশ খুশিও হয়েছে আমার নাতি। ওকে হাসতে দেখলে বড্ড ভালো লাগে।’ 

চরকি কিনছেন এক বৃদ্ধফিরে যাওয়ার সময় নাতি আবিরের হাতে থাকা চরকিটি বৈশাখী বাতাসে ঘুরতে লাগল। কে জানে চরকির এই ঘূর্ণিতে করে হয়তো শৈশবে ফিরছেন ইমাম হোসেন। 

স্ত্রী-সন্তানসহ চারুকলায় যাচ্ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা আহসান হোসেন। কোলে থাকা সন্তানের চোখ আটকে যায় চরকিতে। চরকি পেতে মায়ের কোল থেকে ছেলের নেমে যাওয়ার চেষ্টায় চলতি পথ থেকে চরকির জটলায় আসতে বাধ্য হলেন আহসান। ছেলের জন্য চরকি কিনলেন। স্ত্রী-সন্তানসহ সেই চরকি হাতে ছবিও তুললেন। 

চরকির সঙ্গে সেলফি তুলছেন একজনচরকি নিয়ে আহসান হোসেনের স্মৃতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের শৈশবের সব থেকে সস্তায় পাওয়া সব থেকে দামি আনন্দ। আমরা এই রমনার মাঠেই পয়লা বৈশাখে বড়জোর ২ টাকায় কিনেছি এসব কাগজের চরকি, যা এখন কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। অথচ আমরা বিভিন্ন গাছের পাতা দিয়েই এক বেলার জন্যও চরকি বানিয়ে ফেলতাম। খেলা শেষে আবার ফেলে দিতাম। সেটা অন্য রকম আনন্দ।’ 

তবে এখন আর এসবে কোনো নির্মলতা নেই, আন্তরিকতা নেই। সবকিছুকেই পুঁজি করে এক ধরনের বাণিজ্যিক আবহ বিরাজ করছে। একটা চরকির দাম ১০০ টাকা হওয়া অস্বাভাবিক উল্লেখ করে আহসান বলেন, ‘ছোট থেকে বড় সবাই উৎসবকেন্দ্রিক যে বাণিজ্যিক জাল পেতে বসে আছে, সেটা ঠিক না।’ 

রমনা এলাকায় চরকি বিক্রি করছেন এক বিক্রেতাএদিকে ক্রেতা সামলে আরও নতুন ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য একটি চরকি হাতে নিয়ে বিশেষ কায়দায় সেটি ঘোরাতে থাকেন বিক্রেতা মো. শাহাদুল ইসলাম। তিনি জানান, শিশুরাই এই চরকির ক্রেতা। মাঝে মাঝে বড়রাও কেনে। উৎসবের দিনগুলোতে ঢাকায় ঘুরে ঘুরে চরকি বিক্রি করেন। ফাল্গুন আর বৈশাখের অনুষ্ঠানে চরকি বেশি বিক্রি হয়। সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার টাকার চরকি বিক্রি করেছেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বাগেরহাটের শরণখোলায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাদল মুন্সী (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন জান্নাত আকন (২৫) নামের ওই মোটরসাইকেলের চালকও। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার তাফালবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরকারি প্রাথমিক স্কুলের সামনে আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত বাদল মুন্সীর বাড়ি রায়েন্দা ইউনিয়নের লাকুড়তলা-চালিতাবুনিয়া গ্রামে। আহত চালক জান্নাত আকনের বাড়ি উপজেলা সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাদল মুন্সী জুমার নামাজ পড়তে বেলা সোয়া ১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। স্কুলের সামনে রাস্তা পার হতে গেলে মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর। এতে চালক ও বাদল মুন্সী দুজনে আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের শরণখোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদল মুন্সীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত চালককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফ মোহাম্মদ জানান, বাদল মুন্সীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিনুল হক জানান, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাতিয়া থানার গেটে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা থানা গেটে অবস্থান নিয়ে ওসমান হাদি হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়।

উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী শামছল তিব্রিজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, সদস্যসচিব মো. আলা উদ্দিন, জাতীয় যুবশক্তির জেলা আহ্বায়ক নুরুল আমিন রিপন, উপজেলা আহ্বায়ক ইউসুফ রেজা, সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম রাকিব, কেন্দ্রীয় উপপ্রকাশনা ও গ্রন্থনা সম্পাদক হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, হাতিয়ায় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আর এখন প্রকাশ্যে এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

তাঁরা হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ সব খুনিকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার, হান্নান মাসউদকে দেওয়া হুমকির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি টহল জোরদারের দাবি জানান।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেন যে ওসমান হাদি হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং হান্নান মাসউদকে হুমকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দ্রুতই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের পর বিক্ষোভকারীরা সাময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজা ঘিরে যান চলাচল নিয়ে ডিএমপির নির্দেশনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির নামাজে জানাজার দিন রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমের সম্ভাবনা থাকায় ওই সময় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে।

আজ শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান (পিপিএম) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জানাজা অনুষ্ঠানের সুবিধার্থে খেজুরবাগান ক্রসিং থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ফলে শনিবার সকাল থেকে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নগরবাসীকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিকল্প সড়ক সমূহ

১। মিরপুর রোড টু ফার্মগেট ভায়া মানিক মিয়া অ্যাভিনিউগামী যানবাহন মিরপুর রোড হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত ফার্মগেট/সোনারগাঁও অভিমুখী যানবাহন গণভবন ক্রসিং-লেকরোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিংয়ে ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট এর দিকে গমন করবে।

২। ফার্মগেট টু মানিক মিয়া অ্যাভিনিউগামী ভায়া ইন্দিরা রোডগামী যানবাহন ফার্মগেট হতে খেজুর বাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বামে মোড় নিয়ে লেক রোড-গণভবন ক্রসিং এর দিকে গমন করবে।

৩। ধানমন্ডি হতে ফার্মগেটগামী যানবাহন ধানমন্ডি ২৭ হতে আগত যানবাহন আসাদগেট-গণভবন ক্রসিং ডানে ইউটার্ন করে লেকরোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিং এর দিকে গমনাগমন করবে।

৪। আসাদগেট হতে ফার্মগেট ক্রসিংগামী যানবাহন আসাদগেট-বামে মোড় নিয়ে গণভবন ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে লেক রোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিং এর দিকে গমন করবে।

৫। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে/ইন্দিরা রোড হতে ধানমন্ডিগামী যানবাহন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে/ইন্দিরা রোড হতে আগত যানবাহন খেজুর বাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বামে মোড় নিয়ে লেক রোড-বামে মোড় নিয়ে আসাদগেট-সোজা পথে ধানমন্ডির দিকে গমন করবে।

৬। মিরপুর রোড হতে ধানমন্ডি ২৭ গামী যানাবাহন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হতে ব্লকেড সরিয়ে ফেলা হবে বিধায় মিরপুর রোড হতে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন শ্যামলী-শিশুমেলা-গণভবন-আসাদগেট হতে সোজা ধানমন্ডি ২৭ এর দিকে গমনাগমন করবে।

৭। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগামী যানবাহন সমূহকে জানাজা নামাজ চলাকালীন সময়ে ফার্মগেট এক্সিট র‍্যাম্প ব্যবহারের পরিবর্তে এফডিসি (হাতিরঝিল) র্যাম্প ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।

নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট সীমান্তে খাসিয়াদের গুলিতে ২ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে পৃথক স্থানে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার উপজেলায় সীমান্তের দুটি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পূর্ব তুরুং গ্রামের মো. বোরহান উদ্দিনের ছেলে মো. আশিকুর রহমান এবং একই এলাকার বরম সিদ্দিপুরের আজমন আলীর ছেলে মো. ইয়াকুব আলী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবৈধভাবে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে খাসিয়াদের সুপারিপুঞ্জিতে ঢুকলে তাঁরা গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন মারা যান। লাশ দুটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দমদমিয়া সীমান্ত পিলার নম্বর ১২৬০/৪-এসের পাশ দিয়ে বাংলাদেশি কয়েক ব্যক্তি আনুমানিক এক থেকে দেড় কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে রাজন টিলার সুপারিবাগানে ঢোকে।

এ সময় সেখানে অবস্থানরত ভারতীয় বাগানমালিক খাসিয়ারা তাদের লক্ষ্য করে বন্দুকের কয়েক রাউন্ডটি গুলি ছোড়ে। এতে মো. আশিকুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যরা লাশ বাংলাদেশে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

অন্যদিকে একই দিন বেলা ৩টায় সীমান্ত পিলার ১২৫৫/২ এস থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে বরম সিদ্দিপুর নামক স্থান দিয়ে দুই ব্যক্তি সুপারিবাগানে ঢুকলে খাসিয়ারা তাঁদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছোড়ে। এতে মো. ইয়াকুব আলী নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহত ইয়াকুবকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত