বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ভাঙচুর করল বিমানবন্দরের শ্রমিকেরা, ৭ শিক্ষার্থী আহত    

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৫: ৫৯
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৬: ১৬

রাজধানীর বিমানবন্দরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃতীয় টার্মিনালের শ্রমিকেরা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিমানবন্দরের ফুট ওভার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এবং হ্যাঙ্গার গেটে (৮ নম্বর গেটে) সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অন্তত সাত-আটজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের ১২ তম সেমিস্টারের ছাত্র মনিরুজ্জামান মিলু, ফার্মেসি বিভাগের জামশেদ হাসান এবং বিবিএ বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী মাথিন ইফতেখার ইতু।

শিক্ষার্থীরা আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে আশুলিয়ায় মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের যাচ্ছিল শিক্ষার্থীদের একটি বাস। যাওয়ার পথে বিমানবন্দর এলাকায় বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের শ্রমিক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি গাড়ি আমাদের গাড়িকে ধাক্কা দেয়। পরে সেই গাড়িটিকে বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার গেটের পাশে গিয়ে আটকানো হয়। তখন ধাক্কা দেওয়া গাড়ির ড্রাইভারকে নিয়ে এসে আমাদের গাড়ির যে ক্ষতি করছে, সেটি দেখানো হচ্ছিল। ওই সময় বিমানবন্দরে কর্মরত এডিসি (ADC) ও দেশি (DESHI) কোম্পানির শত শত শ্রমিক এসে আমাদের ওপর হামলা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ভাঙচুর করে। 

শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান মিলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এয়াপোর্টের নতুন শপিং মলের সামনে বিমানবন্দরের কনস্ট্রাকশনের কাজে নিয়োজিত একটি বাস সাইড থেকে চাপিয়ে দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসকে লাগিয়ে দেয়। তখন বাসের জানালার গ্লাস ভেঙে আমার ওপর এসে পড়ে এবং আমার ওপরেই ভেঙে যায়। যার কারণে আমার হাতটা কেটে গেছে।’ 

মনিরুজ্জামান মিলু আরও বলেন, ‘এরপর ওই গাড়িটিকে থামতে বললে ওরা টান দিয়ে চলে যায়। আমরাও ওই গাড়ির পিছু পিছু বিমানবন্দরের ভেতরে র‍্যাব হেডকোয়ার্টারের পাশে যাই। পরে ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই ধস্তাধস্তি হয়।’ 

মনিরুজ্জামান মিলু বলেন, ‘ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। তাদের বাসের ড্রাইভারকে নিয়ে এসে দেখানো হচ্ছিল—তারা কি ক্ষতি করেছে। যখন আমরা ড্রাইভারকে নিয়ে আসছি, ওরা শত শত লোক (শ্রমিক) ইট, হেলমেট দিয়ে আমাদের পুরো বাস ভেঙে দিয়েছে। বাসের মধ্যে মেয়ে (ছাত্রী) ছিল। ওরা বাসের মধ্যে উঠে মেয়েদেরকেও মারছে। সেই সঙ্গে বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি করছে। সেই সঙ্গে যাকে পাইছে তাকেই মারধর করছে। পরবর্তীতে আমাদের বাসের ড্রাইভার গাড়ি টান দিয়ে র‍্যাব হেডকোয়ার্টারের সামনে নিয়ে গেছে। তখন র‍্যাবের লোকজন তাদেরকে থামাই। এ ঘটনায় র‍্যাবের পক্ষ থেকে আমাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটি বিমানবন্দর থানায় রয়েছে।’ 

মাথিন ইফতেখার ইতু বলেন, ‘হামলাকারীরা শুধু বাসই ভাঙচুর করেনি, তারা ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরকেও মারধর করেছে। আমাকেও মারধর করছে, আমার জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে ফেলেছে।’ 

এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মারামারি বিষয়টি এপিবিএন ধরেছিল। পরে এপিবিএন আমাদেরকে জানিয়েছে—রাস্তায় দুই গাড়ির ধাক্কা লেগেছে। পরে মানারাতের স্টুডেন্টরা নাকি ওদের (এডিসি) ড্রাইভারদের ধমক দিয়েছিল। যার কারণে এডিসির শ্রমিকেরা মানারাতের বাসটির কয়েকটি গ্লাস ভেঙে ফেলেছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত