স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণ: জাবির ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জন কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ১১
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ৩১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মোশারফ হোসেন হলের পাশে জঙ্গলে বহিরাগত এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ইয়াসমিন আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিক ও ৪৫তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান। 

বিকেলে সাভার থানা-পুলিশ চারজনকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান আসামি ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের আবেদন করেন। অন্য তিনজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। পরে তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের খাস কামরায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়। তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, আসামি মোস্তাফিজকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের পাশের জঙ্গলে গৃহবধূকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। 

তিনি আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। তাই তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বিচারকের খাস কামরায় গিয়ে জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেন। পরে আদালত তাকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ সব বিষয় নিশ্চিত করেন।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পুলিশ মোস্তাফিজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগের মধ্যরাতে ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হয়। রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার বিচার চেয়ে মিছিল সমাবেশ করে। ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ধর্ষণের অভিযোগে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারীর স্বামী।

মামলার বর্ণনা অনুযায়ী গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নারীকে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। সে সময় তাঁর স্বামীকে হলের এ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মামুন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন। 

তারপর তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। পরে তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। এগুলো নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ওই নারী। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন মোশারফ হোসেন হলের ভেতরের ওই কক্ষে রেখে আসেন। এরপর তাঁর স্বামী অন্যদিক থেকে আসবেন বলে ওই নারীকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।

আরো পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত