কিডনি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান, বিপাকে রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৪
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ২৫

বকেয়া টাকা না পেয়ে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করেই রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যানডোর। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন রোগী ও তাঁর স্বজনেরা।

এ ঘটনায় কিছুক্ষণ মিরপুর সড়ক অবরোধ করেন চিকিৎসা নিতে আসা ক্ষুব্ধ রোগীরা। এতে করে পুরো এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে হাসপাতালের গেটে তালা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। বর্তমানে নতুন কোনো রোগী ডায়ালাইসিস নিতে পারছেন না।

সেবা নিতে আসা রোগীরা বলেন, ‘কয়েক দিন পর পর হাসপাতালটিতে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে করে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। আমরা বাঁচতে চাই। আগের মতো চালানো হোক।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দেশের একমাত্র কিডনি বিশেষায়িত এই হাসপাতালে প্রতিদিন তিন শিফটে ১১৩ জনকে চার ঘণ্টা করে মোট ৩৩৯ জনকে ডায়ালাইসিস দেওয়া হয়।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসকদের পাশাপাশি ডায়ালাইসিস কাজে ৭০ জন কর্মী কাজ করেন।

এমনই একজন আল-আমিন বারী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘১৩ বছর ধরে ডায়ালাইসিস করছি। মন্ত্রণালয় থেকে টাকা না পেয়ে ২০১৮ ও গত বছরের জুলাইতেও বন্ধ হয়েছিল ডায়ালাইসিস।’

হাসপাতালটির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে জানান, অর্থসংকটে প্রায়ই এ ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক মাস ধরে কর্মচারীদের অর্ধেক বেতন দেওয়া হচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ কেনা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন মো. রাসেল। বুধবার দুপুরের দিকে হাসপাতালটিতে এসে এমন জটিলতায় পড়ে যান। ডায়ালাইসিস না নিয়েই ফেরত যেতে হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এই ব্যক্তিকে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালের কাছে কিছু টাকা বকেয়া থাকায় আদায়ের কৌশল হিসেবে সেবা বন্ধ করে দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যানডোর।

অর্থ বকেয়া থাকার বিষয়টি স্বীকার করে হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্যানডোর সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হয়েছে। ঘণ্টা খানেক পর আবারও ডায়ালাইসিস চালু হবে।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্যানডোর শুধু আমাদের হাসপাতালের রোগীদেরই ডায়ালাইসিস করে না, সব হাসপাতালেই তারা ডায়ালাইসিস করে থাকে। আমাদের কাছে ওদের কিছু বিল বকেয়া আছে, সেটিও প্রক্রিয়াধীন। এখন তারা রোগীদের জিম্মি করে ডায়ালাইসিস সেন্টার তালা দিয়ে বন্ধ করে চলে গেছে। যে কারণে রোগীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটি তো আমাদের হাসপাতালের কোনো সমস্যা নয়, স্যানডোর তালা মেরে চলে গেছে এটা তাদের দায়। তারা বলছে টাকা না পেলে ডায়ালাইসিস সেন্টার খুলবে না। আমরা তাদের বলেছি যে টাকাটা প্রসেসিংয়ে আছে, আর সরকারি টাকা পেতে তো একটু দেরি হতেই পারে। এ জন্য সেবা বন্ধ করে দেওয়াটা অন্যায়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত