আল-আমিন রাজু, ঢাকা
শিশু বয়সে সিলেট থেকে কৌতূহলবশত ট্রেনে উঠেছিল মেয়েটি। ভেবেছিল ট্রেন ঘুরে এসে এখানেই তাকে নামিয়ে দেবে। কিন্তু একটা সময়ে নিজেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আবিষ্কার করে সেই সময়ের শিশু অঞ্জনা। মন খারাপ করে স্টেশনে বসেছিল। একজন তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে শর্মী নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেই নারীর রান্নাঘরেই সাতটি বছর কেটে গেছে মেয়েটির। অবশেষে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় মিলেছে মুক্তি। তবে মেয়েটির শরীরজুড়ে শুধু আঘাতের চিহ্ন।
এখন নিজের বয়সটা ঠিকমতো বলতে পারছে না। ঠিকানা কখনো সুনামগঞ্জ আবার কখনো হবিগঞ্জ। বাবা মারা গেছে সেটি তার মনে আছে, কিন্তু পরিবারের কারও ঠিকানা জানা নেই।
বলছি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কলে উদ্ধার হওয়া গৃহকর্মী অঞ্জনা আক্তারের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি-ব্লকের ২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে অঞ্জনাকে উদ্ধার করেছে ভাটারা থানা-পুলিশ।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ভাটারা থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে ঠিকানা খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে অঞ্জনার দেওয়া ঠিকানা মিলছে না।
থানায় বসে নিজের ওপর হওয়া নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছিল অঞ্জনা। সে বলে, ‘সাত বছর ধরে আমাকে রান্নাঘরেই আটকে রেখেছে। একবেলা খাবার দিলে অন্য বেলা দিত না। দিন-রাত কাজ করাত। কোনো ভুল হলেই কাঁটা চামচ, খুন্তি, রুটি বানানো বেলন, চাকু দিয়ে আঘাত করত। এমনকি তালা দিয়ে আঘাত করে সামনের দাঁত ভেঙে দিয়েছে।’
হাত, পা, বাহু, গাল ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্নগুলো দেখিয়ে অঞ্জনা বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছিল। তার পা ফুলে গেছে, বাঁ হাতে বুড়ো আঙুলের ওপর দগদগে রক্তাক্ত ক্ষতগুলোই বলে দিচ্ছে তার ওপর হওয়া নির্যাতনের ভয়াবহতা।
নির্যাতনের পাশাপাশি খাবার আর অসুস্থতায় মেলে না ওষুধ উল্লেখ করে অঞ্জনা বলে, ‘আমাকে ঠিকমতো খাবার দিত না। অসুস্থ হলে ওষুধ দিত না। বরং শুয়ে থাকলে মারধর করত। কাপড় দিত না। রান্নাঘরের বাইরে বের হতে দিত না। বাসায় কেউ আসলে আটকে রাখা হতো।’
সাত বছর পর যেভাবে অঞ্জনার মুক্তি
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসার তিনতলার বাসিন্দা এরিক ও শর্মী দম্পতির বাসায় সাত বছর ধরে আটকে রাখা হয় অঞ্জনাকে। পান থেকে চুন খসলেই শর্মী নির্মম নির্যাতন চালাতেন অঞ্জনার ওপর। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় পাশের ভবনে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল শেখের। প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও অঞ্জনাই একদিন তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা তুলে ধরে উদ্ধারের আকুতি জানায়। এরপর সজল বিষয়টি তাঁর বাসার অন্যদের ও বাড়ির মালিককে জানান। আজ ভোর ৫টায় পড়তে উঠে সজল দেখেন অঞ্জনা তখনো কাজ করছে। কারণ, বাসায় অতিথি আসবে। সারা রাত ধরে কাজ করা অঞ্জনাকে রাতে শুধু সাদা ভাত খেতে দেওয়া হয়েছে। তখনই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানিয়ে উদ্ধারের অনুরোধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করে।
উদ্ধারকারীদের নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে জানিয়ে সজল বলেন, ‘মানবিক কারণে মেয়েটিকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছি। সব সময় মেয়েটিকে রান্নাঘরেই দেখতাম। দিন-রাত যখনই দেখি শুধু কাজ করে। এমনকি আজ ভোরেও ঘুম থেকে উঠে দেখি কাজ করে। পরে বিষয়টি ৯৯৯-এ জানাই। পুলিশ যাওয়ার পরেও এই নারী নিজের নাম-পরিচয় ভুল বলেছেন। তাঁর বাসায় কোনো কাজের মেয়ে নেই। পরে মেয়েটা চিৎকার দিলে পুলিশের সামনেই তাকে মারধর করা হয়।’
গৃহকর্মী নির্যাতনের বিষয় জানতে চাইলে শর্মী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি কোনো নির্যাতন করিনি। মেয়েটি (অঞ্জনা) মানসিকভাবে অসুস্থ। তার রাগ উঠলে সে নিজেই নিজেকে আঘাত করত।’
গৃহকর্মী উদ্ধারের বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘৯৯৯-এ কল পেয়ে আজ ভোরে মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করেছি। তার ঠিকানা খোঁজ করা হচ্ছে।’
নির্যাতনের অভিযোগের বিষয় ওসি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিশু বয়সে সিলেট থেকে কৌতূহলবশত ট্রেনে উঠেছিল মেয়েটি। ভেবেছিল ট্রেন ঘুরে এসে এখানেই তাকে নামিয়ে দেবে। কিন্তু একটা সময়ে নিজেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আবিষ্কার করে সেই সময়ের শিশু অঞ্জনা। মন খারাপ করে স্টেশনে বসেছিল। একজন তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে শর্মী নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেই নারীর রান্নাঘরেই সাতটি বছর কেটে গেছে মেয়েটির। অবশেষে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় মিলেছে মুক্তি। তবে মেয়েটির শরীরজুড়ে শুধু আঘাতের চিহ্ন।
এখন নিজের বয়সটা ঠিকমতো বলতে পারছে না। ঠিকানা কখনো সুনামগঞ্জ আবার কখনো হবিগঞ্জ। বাবা মারা গেছে সেটি তার মনে আছে, কিন্তু পরিবারের কারও ঠিকানা জানা নেই।
বলছি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কলে উদ্ধার হওয়া গৃহকর্মী অঞ্জনা আক্তারের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি-ব্লকের ২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে অঞ্জনাকে উদ্ধার করেছে ভাটারা থানা-পুলিশ।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ভাটারা থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে ঠিকানা খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে অঞ্জনার দেওয়া ঠিকানা মিলছে না।
থানায় বসে নিজের ওপর হওয়া নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছিল অঞ্জনা। সে বলে, ‘সাত বছর ধরে আমাকে রান্নাঘরেই আটকে রেখেছে। একবেলা খাবার দিলে অন্য বেলা দিত না। দিন-রাত কাজ করাত। কোনো ভুল হলেই কাঁটা চামচ, খুন্তি, রুটি বানানো বেলন, চাকু দিয়ে আঘাত করত। এমনকি তালা দিয়ে আঘাত করে সামনের দাঁত ভেঙে দিয়েছে।’
হাত, পা, বাহু, গাল ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্নগুলো দেখিয়ে অঞ্জনা বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছিল। তার পা ফুলে গেছে, বাঁ হাতে বুড়ো আঙুলের ওপর দগদগে রক্তাক্ত ক্ষতগুলোই বলে দিচ্ছে তার ওপর হওয়া নির্যাতনের ভয়াবহতা।
নির্যাতনের পাশাপাশি খাবার আর অসুস্থতায় মেলে না ওষুধ উল্লেখ করে অঞ্জনা বলে, ‘আমাকে ঠিকমতো খাবার দিত না। অসুস্থ হলে ওষুধ দিত না। বরং শুয়ে থাকলে মারধর করত। কাপড় দিত না। রান্নাঘরের বাইরে বের হতে দিত না। বাসায় কেউ আসলে আটকে রাখা হতো।’
সাত বছর পর যেভাবে অঞ্জনার মুক্তি
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসার তিনতলার বাসিন্দা এরিক ও শর্মী দম্পতির বাসায় সাত বছর ধরে আটকে রাখা হয় অঞ্জনাকে। পান থেকে চুন খসলেই শর্মী নির্মম নির্যাতন চালাতেন অঞ্জনার ওপর। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় পাশের ভবনে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল শেখের। প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও অঞ্জনাই একদিন তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা তুলে ধরে উদ্ধারের আকুতি জানায়। এরপর সজল বিষয়টি তাঁর বাসার অন্যদের ও বাড়ির মালিককে জানান। আজ ভোর ৫টায় পড়তে উঠে সজল দেখেন অঞ্জনা তখনো কাজ করছে। কারণ, বাসায় অতিথি আসবে। সারা রাত ধরে কাজ করা অঞ্জনাকে রাতে শুধু সাদা ভাত খেতে দেওয়া হয়েছে। তখনই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানিয়ে উদ্ধারের অনুরোধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধার করে।
উদ্ধারকারীদের নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে জানিয়ে সজল বলেন, ‘মানবিক কারণে মেয়েটিকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছি। সব সময় মেয়েটিকে রান্নাঘরেই দেখতাম। দিন-রাত যখনই দেখি শুধু কাজ করে। এমনকি আজ ভোরেও ঘুম থেকে উঠে দেখি কাজ করে। পরে বিষয়টি ৯৯৯-এ জানাই। পুলিশ যাওয়ার পরেও এই নারী নিজের নাম-পরিচয় ভুল বলেছেন। তাঁর বাসায় কোনো কাজের মেয়ে নেই। পরে মেয়েটা চিৎকার দিলে পুলিশের সামনেই তাকে মারধর করা হয়।’
গৃহকর্মী নির্যাতনের বিষয় জানতে চাইলে শর্মী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি কোনো নির্যাতন করিনি। মেয়েটি (অঞ্জনা) মানসিকভাবে অসুস্থ। তার রাগ উঠলে সে নিজেই নিজেকে আঘাত করত।’
গৃহকর্মী উদ্ধারের বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘৯৯৯-এ কল পেয়ে আজ ভোরে মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করেছি। তার ঠিকানা খোঁজ করা হচ্ছে।’
নির্যাতনের অভিযোগের বিষয় ওসি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিক্ষোভের পর রাত ১০টার দিকে টিএসসিতে গায়েবানা জানাজার নামাজও আদায় করা হয়
৫ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম আদালতে ইসকন নেতা ও সনাতন সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবী নিহতের ঘটনায় দিনভর উত্তপ্ত ছিল বন্দরনগরী। গতকাল সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার
৬ ঘণ্টা আগেহবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। আজ মঙ্গলবার উপজেলার পুকড়া এলাকায় নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৭ ঘণ্টা আগেববি, ট্রেজারার, সেনা কর্মকর্তা, বরিশাল, জেলার খবর
৭ ঘণ্টা আগে