ঢাকায় ৩ বছরে আমূল পরিবর্তন করেছি: তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩, ১৫: ১৪
আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, ১৫: ২৫

৫০ বছরের পুঞ্জীভূত নাগরিক সমস্যা সমাধানে গত তিন বছরে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা অবসবাসযোগ্য নগরী ছিল। গত তিন বছরে আমরা আমূল পরিবর্তন করতে পেরেছি। পাঁচটি রূপরেখার আলোকে পরিকল্পনা সাজিয়েছি। 

আজ মঙ্গলবার নগর ভবনে দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তিন বছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এসব কথা বলেছেন। 

মেয়র তাপস বলেন, ‘গত তিন বছরে দায়িত্ব পালনের সময় নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করাই সবচেয়ে বড় সফলতা। দায়িত্ব গ্রহণের পর জলাবদ্ধতা দূর করাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আগে বৃষ্টির সময় নগরীর ৭০ শতাংশ ডুবে যেত। কিন্তু এখন জলাবদ্ধতা হচ্ছে না। গত তিন বছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে, যার সুফল গত বছর থেকেই নগরবাসী পেতে শুরু করেছে।’ 

মেয়র তাপস আরও বলেন, শ্যামপুর, মান্ডা, জিরানী ও কালুনগর খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ এবং খালের নান্দনিক পরিবেশ তৈরির জন্য ৮৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ধোলাইখাল ও বুড়িগঙ্গায় নান্দনিক পরিবেশ তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিন বছরে ৩৬টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুশাসনের লক্ষ্যে অভিযান চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘তিন বছরে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৩৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দিয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তাঁদের বাসা বরাদ্দ দিয়েছি।’ 

তাপস বলেন, ঢাকা নগর পরিবহনের মাধ্যমে বাসরুট রেশনালাইজেশন চালু করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবহনব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। পর্যটনের বিস্তার ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঐতিহ্য বলয় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৩৪ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মূল্য ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার ওপরে। এই অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে। তিন বছরে সাতটি খেলার মাঠ ও চারটি পার্কের উন্নয়নকাজ শেষ করেছি। প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে ব্যায়ামাগার নির্মাণ করা হবে, যেখানে মেয়েদেরও ব্যায়াম করার সুযোগ থাকবে। মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি ওয়ার্ডে ১৩ জন মশককর্মী ও একজন করে সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সারা বছর এই কার্যক্রম চলবে। 

সবুজায়ন ও ছাদবাগান প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকার প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, যাঁরা ছাদবাগান করেন, তাঁদের মাত্র ২০ শতাংশ তা পরিষ্কার রাখেন। তাই ছাদবাগানের মাধ্যমে সবুজায়নের কোনো পরিকল্পনা সিটি করপোরেশনের নেই। তবে তিন বছরে ২ লাখ গাছ লাগানো হয়েছে। আরও গাছ লাগানো হবে। 

সাত মসজিদ রোডে গাছ কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সড়কের গতি বাড়াতে সড়ক বিভাজক ঠিক করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই সেটা করা হচ্ছে। এ জন্য কিছু গাছ কাটা পড়েছে। আর সড়কের মাঝখানে উন্নত দেশে বড় গাছ লাগানো হয় না, বড় গাছ পড়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। আমরা ভবিষ্যতে সড়ক বিভাজকে ফুল গাছের মতো ছোট গাছ লাগাব। বড় গাছ লাগাব না। আগামী বছর থেকে কাউন্সিলরেদের জন্য ১ কোটির বদলে ২ কোটি টাকা এবং সাংসদদের জন্য ২ কোটির বদলে ৪ কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী ও কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানসহ অন্যরা। সংবাদ সম্মেলন শেষে নগর ভবন চত্বরে একটি গাছ রোপণ করেন মেয়র।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত