যোগাযোগ-পর্যটন উন্নয়নে হাওরে কয়েক শ কোটির প্রকল্প

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ২২
Thumbnail image
মিঠামইন সদরে ঘোড়াউত্রা নদীতে নির্মণাধীন সেতু। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ ও পর্যটন খাতে বেশ কিছু কাজ হলেও তা রয়ে গেছে অনেকটা অগোছালো। এ কারণে এসব কাজের প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না হাওরবাসী। কৃষিপণ্য পরিবহনে ঝক্কি, চলাচলে দুর্ভোগ ও পর্যটকদের আবাসন সমস্যার ফলে গতি পায়নি স্থানীয় অর্থনীতি। এ পরিস্থিতিতে অবকাঠামো উন্নয়নে হাওরে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। নির্মিত হচ্ছে কয়েকটি সেতু, সড়ক ও পর্যটকদের আবাসনের জন্য সার্কিট হাউস। কয়েক শ কোটির টাকার এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম একসময় অবহেলিত জনপদ হিসেবে পরিচিতি ছিল। এখন সেখানে সড়ক, সেনানিবাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনাও বেড়েছে। তবে কয়েকটি সেতুর অভাবে উন্নয়নের প্রকৃত সুফল পাচ্ছিল না হাওরবাসী। থাকা-খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকেরাও দুর্ভোগ-অস্বস্তিতে ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এসব সমস্যা দূর করতে মিঠামইনে পর্যটকদের জন্য নির্মিত হচ্ছে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মিনি সার্কিট হাউস। আগামী তিন মাসের মধ্যে চার তলা ভবনটির কাজ শেষ হবে। এখানে দূর-দূরান্তর পর্যটকেরা স্বল্প খরচে আবাসনের সুবিধা পাবেন। এটি নির্মিত হলে হাওরে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে।

তা ছাড়া, মিঠামইন সদরে ঘোড়াউত্রা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুটির কাজও শেষের দিকে। ৩৬২ মিটার লম্বা সেতুটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। এর কাজ শেষ হলে কাজীপুর, খিলপাড়াসহ অন্তত ১০টি গ্রাম সরাসরি যুক্ত হবে উপজেলা সদরের সঙ্গে। সহজ হবে কৃষিপণ্য পরিবহন, পর্যটক ও শিক্ষার্থীদের চলাচল।

উপজেলা প্রকৌশলী ফয়জুর রাজ্জাক বলেন, ‘যে রেস্টহাউস নির্মিত হচ্ছে, এটা হলে পর্যটকদের খুবই সুবিধা হবে। তা ছাড়া, হাওরে যে ব্রিজ ও সাবমারসিবল সড়ক তৈরি হচ্ছে, সেগুলো দিয়ে অতি সহজেই বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে পারছে এবং পারবে।’

এদিকে ইটনা উপজেলার বর্শিকুড়ায় ধনু নদে নির্মিত হচ্ছে প্রায় শতকোটি টাকার সেতু। ৫৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির কাজ শেষের দিকে। এটি খুলে দেওয়া হলে তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ সদর, ময়মনসিংহ ও হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হবে। স্থানীয়রা বলছেন, পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে এই দৃষ্টিনন্দন সেতু।

ইটনা এলজিইডির প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেন, সেতুটি চালু হলে বহু বছরের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে হাওরের লোকজন। অষ্টগ্রামের আব্দুল্লাহপুর, কলমা ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে দুর্ভোগের এক নাম বিলমাকসা নদী। এর কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোকে উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ করতে নির্মিত হচ্ছে ৪৫০ মিটার দীর্ঘ সেতু। আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ প্রায় ৮০ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ শেষ হবে।

আব্দুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা কাউসার, আলম ও রনি জানান, তাঁরা কিশোরগঞ্জে মানুষ হলেও তাঁদের এখান থেকে খুব কাছেই হবিগঞ্জ। জরুরি দরকারে তাঁরা নদীপথে হবিগঞ্জে যান এবং তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য সেখানেই বেশি। হবিগঞ্জে যেতে একটি সেতুর দাবি তাঁদের বহু দিনের ছিল।

উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ রেজাউল হকের ভাষ্য, এলাকাবাসীর জীবনযাত্রা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে সেতুটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত