সাটুরিয়ায় গ্রাহকদের ৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতি

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধ
Thumbnail image

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় মানব মঙ্গল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা আদায় করে অফিস তালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আজ শনিবার সকালে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের শিমুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অফিসে তালা ঝুলতে দেখে অফিসের সামনে গ্রাহকেরা বিক্ষোভ করছেন।

সমবায় সমিতি আইন-২০২৩ সংশোধিত অনুযায়ী, ব্যাংকিং কার্যক্রমে জিপিএস, এফডিআর ও সঞ্চয়ী হিসেব খুলে কোনোভাবেই গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করা যাবে না।

অথচ এখানে এসব নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ক্ষুদ্রঋণের নামে গ্রামের সহজ সরল লোকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আমানত আদায় করা হয়েছে। আমানতকারীদের টাকা না দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জানা যায়, উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে ২০১১ সালে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধন নিয়ে মানব মঙ্গল মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি সমিতি গঠন করেন একই গ্রামের আলাউদ্দিন ও লুফর রহমান পাখি। মাঠকর্মীদের নিয়ে তিনি এই ঋণদান কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সমিতিতে বর্তমানে ৫ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। তবে কয়েক দিন ধরে অফিসে তালা দিয়ে উধাও হয়েছেন সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ভুক্তভোগী কালিকাবাড়ী গ্রামের মো. নবু ব্যাপারী বলেন, ‘অধিক মুনাফার আশায় ১৪ লক্ষ টাকা আমানত হিসেবে জমা রেখেছিলাম। আজ সকালে এসে অফিসে তালা ঝুলতে দেখি। এখন আমার কি হবে। টাকা ফেরত আমাকে কে দেবে।’

শিমুলিয়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে ৯ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ওই সমিতিতে জমা রেখেছি। অনেক দিন যাবৎ টাকা ফেরত চাচ্ছি। আজ দেব কাল দেব কোনো টাকাই ফেরত পাচ্ছি না। আজ অফিস তালা দিয়ে ৫ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।’

এ ছাড়া রৌহা গ্রামে মো. কইফত আলী ৮ লক্ষ, মো. আরিফ খান ৫ লক্ষ, দরগ্রামের হাবু মিয়া ৪ লক্ষ ৬১ হাজার, লিয়াকত আলী ৫ লক্ষ, কালিকাবাড়ী গ্রামের ছালাম মিয়া ৭ লক্ষ ৫০ হাজার, চায়না বেগম ৮ লক্ষ, দরগ্রামের মোনছের আলী ২ লক্ষ ৫০ হাজার, চরতিল্লী গ্রামের রাশেদা বেগম ৩ লক্ষ, পারতিল্লী গ্রামের ঝরনা আক্তার ৩ লক্ষ, ফারুক হোসেন ২ লক্ষ টাকা জমা করেছেন বলে প্রমাণ হিসেবে তারা তাদের পাশবহি তুলে ধরেন।

মানব মঙ্গল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. ফিরুজুল আলম বলেন, কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আরা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত