নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে টনসিলের অপারেশন করতে এসে মেহেনাজ আক্তার আনিকা (১৬) নামে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে শহরের সিলভার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশে অভিযোগ করলে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন। 

নিহত মেহেনাজ আক্তার নারায়ণগঞ্জ শহরের আমানত উল্লাহর মেয়ে। 

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, ‘কিশোরীর টনসিলের অপারেশন করার পর চিকিৎসকরা তার কোনো খোঁজখবর রাখেনি। নার্সদের তত্ত্বাবধায়নে রেখে উদাসীন আচরণ করেছে। দীর্ঘ সময় ব্যথায় ছটফট করলেও ডাক্তার আসেনি। পরে সকালে ব্যাথা নিয়েই মৃত্যুবরণ করে মেয়েটি।’

নিহতের বাবা আমানত উল্লাহ বলেন, ‘আমার মেয়ের টনসিলের চিকিৎসার ডাক্তার আবদুল্লাহ আল মামুনের তত্ত্বাবধায়নে সিলভার ক্রিসেন্ট হসপিটালে ভর্তি করি। অপারেশন করার জন্য ৮০ হাজার টাকা চুক্তি হয় তার সঙ্গে। শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে আমার মেয়ের অপারেশন হয়। অপারেশনের পর ডাক্তার মেয়েকে কিছু খাওয়াতে নিষেধ করে। 

‘রাত ৩টার দিকে ব্যথায় আর্তনাদ করতে থাকলে নার্সরা এসে ব্যথা ইঞ্জেকশন দেয়। এক ঘণ্টা পর ফের ব্যথা উঠলে আবারও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। আজ সকাল থেকে ধীরে ধীরে মেয়ের অবস্থায় অবনতি হচ্ছিল। ১০টার দিকে ব্যথায় ছটফট করতে করতে তার পুরো দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। পুরো অপারেশনের পর থেকে আমার মেয়ের কোনো খোঁজ নেয়নি ডাক্তার। তার অবহেলার কারণেই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।’ 

এদিকে ঘটনার পর মৃতের স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ রোমানকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এ বিষয়ে নারায়ণঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে, ১০ মার্চ শহরের খানপুরে আল হেরা জেনারেল হাসপাতালে টনসিলের অপারেশন করতে এসে মোস্তাকিম (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। সেই শিশুটিরও অপারেশন করেছিলেন ডাক্তার আবদুল্লাহ আল মামুন। এর ১৩ দিনের মাথায় ফের আরেক রোগীর মৃত্যু হলো এই ডাক্তারের হাতে।