বাংলাদেশে কমছে জাপানি এনজিও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯: ০২
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯: ১৫

বাংলাদেশে কাজ করা জাপানভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) সংখ্যা দিনকে দিন কমছে। তবে বাড়ছে দেশীয় এনজিওর সংখ্যা। ২০০১ সালে বাংলাদেশে ৩১টি জাপানি এনজিও কাজ করত। বর্তমানে এই সংখ্যা ১৩টি। আর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশি এনজিও ছিল ৪৫টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৫৪-তে।

আজ বুধবার জাপানভিত্তিক এনজিও শাপলা নীড়ের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক ওহাশি মাসাকি। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে দেশীয় এনজিওর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফীতি এবং জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে যাওয়ার ফলে জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মাসাকি জানান, গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমে আসছে। ২০০১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ১৫৪টি জাপানি এনজিওর কার্যক্রম ছিল। বর্তমানে এই সংখ্যা ৬২টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৩, ভারতে ২৫, পাকিস্তানে ৪, নেপালে ১১ এবং শ্রীলঙ্কায় ৯টি এনজিও কাজ করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সরকার বিদেশি এনজিওর নিবন্ধন এবং শর্তাবলি কঠিন করে ফেলা, এই খাতে অভিজ্ঞ বিদেশিদের ভিসা কমিয়ে দেওয়া এবং ন্যূনতম বাজেটসীমা বৃদ্ধি করার কারণেই জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এবং নেপালে বিদেশি এনজিওদের স্বাগত জানানো হয়। অন্য দেশগুলোতে তেমনটা হয় না বলেও জানান মাসাকি।

শাপলা নীড় জাপানভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকেই কাজ করছে। সংস্থাটি ১৯৭২ সাল থেকে প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করা, শিশু সুরক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং গ্রামীণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

শাপলা নীড়ের ৫০ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর পরিচালক তপন কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘জাপান আমাদের পরম বন্ধু হিসেবে প্রমাণিত। বিভিন্ন সংকটে তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এনজিও এবং সরকারের মধ্যে সম্পর্ক সব সময়ই ভালো। বর্তমানে সেটা সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে।’ 

বাংলাদেশে জাপানি এনজিওর সংখ্যা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো সব এনজিওর পাশে দাঁড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে প্রতিদিন শত শত ফাইল আসে। আমাদের অফিসের সময় সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা। কিন্তু প্রতিদিন আমরা ৪টা-৫টা পর্যন্ত কাজ করি।’ 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, শাপলা নীড় বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে, একই সঙ্গে জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক দৃঢ় করতেও কাজ করছে। 

এ ছাড়া মেট্রোরেল, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্পগুলোতে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলো চালু হলে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে যাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত