Ajker Patrika

জবিতে যৌন হয়রানি: কাল্পনিক ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ করেছে মীম, বললেন শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪, ১৯: ১৮
জবিতে যৌন হয়রানি: কাল্পনিক ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ করেছে মীম, বললেন শিক্ষক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীমের যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন বলেছেন, ‘একটি কাল্পনিক ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’ একই বিভাগের চেয়ারম্যান জোনায়েদ আহমেদ হালিম দাবি করেন, মীম দ্বিতীয় ও সপ্তম সেমিস্টারের ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেননি, তাই তিনি ফেল করেছেন।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তাঁরা এসব কথা বলেন। 

শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন বলেন, ‘২০১৯ সালে ঘটনার কথা উল্লেখ করে ২০২২ সালে এসে কাল্পনিক একটি অভিযোগ দেয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন হয়েছে। এমন কি ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার ফলে দুই বছরেও ফলাফল পাওয়া যায়নি। এমনকি এই ঘটনায় মিথ্যা তদন্ত রিপোর্টের ঘটনায় উচ্চ আদালতে যাওয়া ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিষয়ে ডিবি আমাদের ডেকেছে। এই বিষয়ে তারা যা জানতে চেয়েছে আমরা সেই তথ্য দিয়েছি।’ 

অভিযোগের বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম বলেন, ‘এখানে দুই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে ডিবির হারুন সাহেব আমাদের সঙ্গে কথা বললেন। যৌন হয়রানির বিষয়টি আদালতে কার্যক্রম চলছে। তাই এটা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারছি না।’

ভাইভা পরীক্ষায় জিরো পাওয়ার বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্টের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার একটা নিয়ম আছে। পরীক্ষকেরা গোপন একটি খামে সিলগালা করে নম্বর পত্র পাঠান। সে (ভুক্তভোগী ছাত্রী) ঠিকমতো ক্লাসে আসত না। দ্বিতীয় সেমিস্টারের একটি কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট ও উপস্থিতি মিলিয়ে ৪০ মার্ক থাকে। সে এইটার কোনো কার্যক্রমে যোগ দেয়নি। ফলে সে শূন্য পেয়েছে। সপ্তম সেমিস্টারেও চারটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়নি। ফলে সব মিলিয়ে ২৩ পেয়েছিল। যেহেতু ৪০ মার্কে পাস তাই রেজাল্ট শিটে শূন্য এসেছে।’ 

জুনায়েদ আহমেদ হালিম বলেন, ‘ডিবিতে ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়ে তারা আমাদের ডেকেছে ক্রস চেক করার জন্য। তারা যা যা জানতে চেয়েছে আমরা তথ্য দিয়েছি।’ 

কাজী ফারজানা মীম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার কারণে অভিযুক্ত শিক্ষকেরা নানা মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। এটা নিয়ে ডিবিতে অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ তারা এই বিষয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ডেকেছিল। ডিবির প্রধান তাদেরকে বলে দিয়েছে যেন আমাকে কোনোভাবে হুমকি না দেন।’ 

পরীক্ষায় শূন্য পাওয়ার বিষয়ে মীম বলেন, ‘তারা আমাকে শূন্য দেওয়ার বিষয়ে বানোয়াট কথা বলেছে। আমি পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে অনুপস্থিত দেখিয়েছেন। এই ঘটনা আমার যৌন হয়রানির অভিযোগেও উল্লেখ করেছি।’ 

দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘দুই পক্ষকে আমরা ডেকেছি। ভুক্তভোগী মীম আমাদের কাছে আবদার করেছে, সে যেন স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে। আর যেন কেউ বিরক্ত না করে। আমরা বিষয়টি শিক্ষকদের বলেছি। তারা বলেছে, আমরা কোনো বিরক্ত করব না।’

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘এরপরেও যদি মীমকে কেউ বিরক্ত করে তাহলে মীমকে বলা হয়েছে আমাদের ডিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যেন জানানো হয়। তারা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবে।’ 

যৌন হয়রানির বিষয়ে ডিবির প্রধান বলেন, ‘এটি আমরা তদন্ত করছি। এটার তদন্ত শেষ হয়নি। পরবর্তীতে জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত