পরীক্ষা থাকায় গেস্টরুমে না যেতে পারায় শিক্ষার্থীকে মারধর ছাত্রলীগের

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২২, ২০: ২৭
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ২০: ৩১

পরীক্ষা থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্রলীগ পরিচালিত গেস্টরুমে উপস্থিত হতে পারেননি এক শিক্ষার্থী ৷ গেস্টরুমে না যাওয়ায় সেই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে রোববার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম শিপন মিয়া। তিনি তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগের তৃতীয় বর্ষ ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ঘটনার দিনে ভয়ে হল ছেড়ে এক বন্ধুর বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। বর্তমান মানসিক অস্বস্তি ও চাপে আছেন বলে জানান তিনি।

ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী ও হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন শিপন মিয়া। 

জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত ইয়াসির আরাফাত প্লাবন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মী আল ইমরান তাকে স্টাম্প দিয়ে পেটে খোঁচা মেরেছেন। ইয়াছিন আল শাহীন তাঁর ফোন কেড়ে নিয়েছেন ৷ সকলেই সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং হল ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর সিকদারের অনুসারী ৷ 

পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী বলেন, ‘বিভাগের পরীক্ষার জন্য ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারিনি ৷ এ জন্য আমাকে রাতে ছাত্রলীগের পলিটিক্যাল রুমে যেতে কয়েকবার ফোন দেন বড় ভাইয়েরা ৷ কিন্তু পরীক্ষার প্রস্তুতির কারণে তাদের ফোন ধরতে পারিনি ৷ পরে আমাকে খুঁজে ধরে নিয়ে যেতে কয়েকজনকে পাঠানো হয় ৷ তারা আমাকে হলের ১৭৭ নম্বর রুমে (পলিটিক্যাল রুম) ডেকে নিয়ে যায় ৷ সেখানে গেলে শাহীন আমার হাত থেকে ফোন কেড়ে নেন ৷ কেন ফোন ধরিনি তা জানতে চান ৷ আমাকে গালিগালাজ করেন ৷ একপর্যায়ে প্লাবন আমার গালে চড় মারেন ৷ ইমরান আমাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটে খোঁচা মারেন ৷ পরীক্ষার দিন রাতে এ ধরনের নির্যাতন করায় মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়ি ৷ আমি এখন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ৷ আমার সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি ৷’

এদিকে অভিযুক্ত ইয়াসিন আল শাহীন ও আরফাত প্লাবনকে ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। ইমরান ঘটনাকে অস্বীকার করে আজকের পত্রিকা বলেন, ‘পুরো ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে ছাত্রলীগের এ রকম কোনো ধরনের কোন কাজে উৎসাহ দেয় না।’ 

হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদার বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। খোঁজ খবর নিচ্ছি। তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি হলে সমাধান করব। একই সঙ্গে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তানভীর শিকদার। 

হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, অভিযোগ পত্র পেয়েছি। আমি কালকে আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি মিটিংয়ের ডাক দিয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন অধ্যাপক বেলাল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত