‘বেশির ভাগ বিদেশি প্রসাধনী নকল, দেশি পণ্য ব্যবহার করুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ৫৬
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ২০

বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া বেশির ভাগ বিদেশি প্রসাধন পণ্য নকল। তাই সেগুলো পরিহার করে দেশি প্রসাধন পণ্য ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি যাঁরা বিদেশি মোড়কে দেশি পণ্য বাজারজাত করছেন, তাঁদের গুণগত মান ঠিক করে নিজস্ব নামে দেশি পণ্য হিসেবে বাজারজাত করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। 

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগযুক্ত পণ্যের মান’ বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, বর্তমান বিশ্বে প্রসাধন পণ্যের বাজারের পরিমাণ সাত ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেখানে হালাল পণ্যের বাজারের পরিমাণ তিন ট্রিলিয়ন ডলার। হালাল পণ্য রপ্তানি করা ১২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম নেই। অথচ বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। তিনি বলেন, ‘সবাই বারবার কিন্তু বলছে, আমাদের পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। আস্থা বাড়ার কারণ হচ্ছে পণ্যের গুণগত মান খারাপ না। লাইসেন্সিংয়ের বিষয়টি সহজ করা, পণ্য উৎপাদনে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সুবিধা সহজ করায় সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে। শুধু শহর নয়, গ্রামের মানুষের কাছেও পণ্যের মান সম্পর্কে প্রচার করতে হবে।’ 

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ইসহাকুল হোসেন সুইট বলেন, ‘বাংলাদেশে লাভ করা সহজ, কিন্তু ব্যবসা করা কঠিন। আমলাতন্ত্রের কারণে যেন আমাদের কষ্ট বেড়ে না যায়। অনেক বিজ্ঞাপনের বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল থাকে না।’ এ ক্ষেত্রে ভোক্তা–অধিকারকে নজর রাখার পরামর্শ দেন তিনি। 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) সহসভাপতি এম এস সিদ্দিকী মনে করেন, দেশীয় শিল্পের প্রসারে সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে। কারণ, আমদানিনির্ভরশীলতা কমাতে দেশের কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদন করছে, তারা যেন বিশেষ নীতিসহায়তা পায়, তা–ও নিশ্চিত করতে হবে। 

স্কিন কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিনা হক বলেন, নকল ও ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে মানুষ স্কিন ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় মানসম্পন্ন পণ্য ব্যবহার। প্রসাধন পণ্য ব্যবহারের আগে স্কিন পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। 

বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক মোরশেদা বেগম বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, বিদেশি পণ্যের চেয়ে আমাদের দেশের পণ্যের মান খারাপ না। শুধু মোড়কের কারণে অনেকে আমাদের দেশের পণ্য পছন্দ করেন না।’ 

থাইল্যান্ডের নাগরিক ড. সাকুন মাংগুত তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, আসলে বাংলাদেশের উচিত এখন পণ্য নয়, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকে বেশি নজর দেওয়া। বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের আস্থা অর্জনে গবেষণায় জোর দেওয়ার জন্য তাগিদ দেন তিনি। 

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন, অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত