Ajker Patrika

কৃত্রিম হাতের আড়ালে রানার অভিনব ইয়াবা কারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৩: ৫৪
কৃত্রিম হাতের আড়ালে রানার অভিনব ইয়াবা কারবার

চার বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক হাত অকেজো হয়ে যায় রানা হাওলাদারের (২৬)। তারপর চিকিৎসার প্রয়োজনে কনুইয়ের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। সেই অংশে কৃত্রিম হাত লাগিয়ে অভিনব এক কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার পুলিশ। এ সময় নকল হাতের আড়ালে লুকিয়ে রাখা ১৫৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকালে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। 

আজিমুল হক জানান, রাজধানীর জনবহুল বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে মানুষের ভিড়ের মধ্যে অভিনব কায়দায় মাদক পরিবহন ও হাতবদল করত একটি চক্র। সেই চক্রের একজন সদস্য রানা হাওলাদার। তিনি নিজের হাতের কনুইয়ের নিচের কৃত্রিম হাতের আড়ালে ইয়াবা বহন করতেন। 

গত সাত-আট বছর ধরেই তিনি এমন অভিনব কায়দার মাদকের কারবার করে আসছিলেন বলে জানান আজিমুল হক। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর চার বছর ধরে বাম হাতের কনুইয়ের নিচে সংযুক্ত প্লাস্টিকের কৃত্রিম হাতকেই ইয়াবা বহনের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন রানা হাওলাদার।’ 

ডিসি আজিমুল হক আরও জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতিরঝিল থানার একটি দল পশ্চিম রামপুরার উমর আলী লেন এলাকা থেকে রানা হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রানা হাওলাদারের বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচের অংশ কেটে ফেলেন চিকিৎসক। পঙ্গু রানার দৃশ্যমান পেশা অটোরিকশাচালক। তবে এর আড়ালে বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচে সংযুক্ত প্লাস্টিকের কৃত্রিম হাতের ভেতরে ফাঁকা জায়গায় বিশেষ কায়দায় তিনি ইয়াবা পরিবহন করতেন। মূলত অটোরিকশা চালিয়েই তিনি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যাত্রী আনা-নেওয়ার পাশাপাশি ইয়াবা সরবরাহ করতেন। 

তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক আরও বলেন, রানা হাওলাদার বেশ কিছুদিন ধরে মিরপুর এলাকায় থাকেন। সাত দিন আগে তিনি বিয়ে করেছেন। এটা তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রী তাঁকে তালাক দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি মিরপুর থেকে বাসযোগে নতুন স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। রামপুরা এলাকায় এসে বাস থেকে নেমে তাঁর স্ত্রীকে বসতে বলে ইয়াবা ডেলিভারি দিতে গিয়ে হাতিরঝিল থানার পুলিশের হাতে তিনি গ্রেপ্তার হন। 

গ্রেপ্তার রানা হাওলাদারের বিরুদ্ধে শরীয়তপুরের সখীপুর থানায় দুটি মাদক মামলাসহ মোট তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আজিমুল হক জানান, রানা হাওলাদার যাকে ইয়াবা দিতে গিয়েছিলেন এবং যার কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করেন, তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

এ ধরনের মাদক হাত বদল চক্রের আরও সদস্য রয়েছে কি না, জানতে চাইলে ডিসি বলেন, নিঃসন্দেহে রানা হাওলাদার একা নন। আরও অনেকে আছে। আমরা একজনকে ধরে শুরু করেছি। আমাদের কাছে তথ্যটি অনেক দিন ধরেই ছিল। আমরা কাজ করছি। এর সঙ্গে আরও অনেক লোক জড়িত বলে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। গ্রেপ্তারকৃতকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 

 প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি সাত-আট বছর ধরে এ কাজ করছেন। আগে শরীয়তপুরে করলেও গত তিন-চার বছর ধরে ঢাকায় করছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের সবারই একটি সহানুভূতিশীল দৃষ্টি রয়েছে। কিন্তু তারা এটি কাজে লাগিয়ে এ ধরনের অপরাধ করছে এবং এটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বিশেষ করে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে মাদক হাত বদল করে। ছোট মাদক হওয়ায় ভিক্ষা বা হ্যান্ডশেক করার ছলে মাদক হাতবদল করে। এরা মূলত খুচরা বিক্রেতা। 

হাত কীভাবে হারিয়েছে জানতে চাইলে আসামির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জানিয়েছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতটি পুড়ে গেছে। পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শে কাটা হয়েছে।’ 

এই চক্রের পেছনে কারা জড়িত জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ‘তারা কাটাউট পদ্ধতিতে মাদক হাতবদল করত। তারা একে অন্যকে চেনে না। তাদের শনাক্ত করা কঠিন। এর আগেও আমরা অনেক চক্র ধরেছি। আমরা চেষ্টা করছি চক্রের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে।’ 

সাদা ইয়াবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাদকের বিভিন্ন ডায়মেনশন থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন সাদা মাদক তৈরি করছে। কেমোফ্লেক্স করতেই তারা এটি করছে। যারা এটার প্রতি আসক্ত, তাদের কাছে নতুনত্ব আনার জন্যই এটা করা হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাটি কাটা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এসআইসহ ৬ জন টেঁটাবিদ্ধ, বাড়িঘরে আগুন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সংঘর্ষের সময় কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংঘর্ষের সময় কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশের এসআইসহ অন্তত ছয়জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় অন্তত চারটি বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের কংশপুরা গ্রামে মো. জহির ও খলিলুর রহমানের লোকজনের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

টেঁটাবিদ্ধ সিরাজদিখান থানার এসআই হাফিজুর রহমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকি আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাটি কাটা নিয়ে কংশপুরা গ্রামের খলিলুর রহমান ও পূর্ব রামকৃষ্ণদি গ্রামের মো. জহিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কংশপুরা গ্রামে দুই পক্ষের লোকজন টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় উভয় পক্ষের কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। সংঘর্ষ থামাতে সিরাজদিখান থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে এসআই হাফিজুর হাতে টেঁটাবিদ্ধ হন। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।

সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জাহানারা আক্তার বলেন, পুলিশের এসআইয়ের ডান হাতে টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘জহিরের অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করে দেওয়ায় লোকজন নিয়ে আমার বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করা হয়েছে। আমার কয়েকজন লোক টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন।’

এদিকে মো. জহির বলেন, ‘খলিলের সঙ্গে আমার বিরোধ অনেক আগের। আজকের ঘটনায় আমি জড়িত নই।’

লতব্দী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন খান খোকন বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটা ও ভরাটকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজকের ঘটনায় কয়েকজন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন।

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে মামলা দায়ের করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরে নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের লাশ ২২ দিন পর পঞ্চগড়ে উদ্ধার

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি 
আক্তারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
আক্তারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের চৌগাছায় নিখোঁজের ২২ দিন পর আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামের এক পুলিশ সদস্যের অর্ধগলিত লাশ পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় সদরের ৬ নম্বর সাতমোড়া ইউনিয়নের নয়মাইল এলাকার একটি আখখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। আজ শুক্রবার নিহত আক্তারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (শুক্রবার রাত ৬টা ১৫ মিনিট) পরিবারের সদস্যদের পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা জানান নিহত আক্তারুজ্জামানের স্ত্রীর ভাই মামুনুর রশীদ মামুন। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতা দেখে তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন লাশটি তাঁর বোনের স্বামীর।

জানতে চাইলে পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন জানান, লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য থানায় রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা থানায় পৌঁছালে সেটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে। এরপর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আক্তারুজ্জামান চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা গ্রামের মৃত আনিচুর বিশ্বাসের ছেলে। তিনি খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কর্মরত ছিলেন।

জানা গেছে, লাশটির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তবে লাশটির কোনো তথ্য না থাকায় জানার জন্য চেষ্টা করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা। ক্লুলেস লাশটির পরিচয় শনাক্তে একমাত্র সূত্র হয় উদ্ধার করা লাশের আন্ডারওয়্যার।

যা ছিল পুলিশের লোগো-সংবলিত। পরে সেটি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তাঁর পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতার ছবি নিহত আক্তারুজ্জামানের স্ত্রীকে নিয়ে দেখালে তিনি তাঁর স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন।

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর নিহত পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার শিমা চৌগাছা থানায় নিখোঁজের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডি ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী-সন্তানসহ চৌগাছা শহরের ইছাপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন আক্তারুজ্জামান। গত ২৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে তিনি বাড়িতে আসেন। পরদিন ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যান।

এর পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি।

জিডিতে শাহিনা আক্তার শিমা বলেন, ‘তিন দিন ধরে কোথাও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।’ তিনি জানান, আক্তারুজ্জামান তাঁর ব্যবহৃত দুটি ফোন বাসায় রেখে গিয়েছেন। ফলে কোনোভাবেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীমান্তে বাঘ আতঙ্ক, বিজিবির সতর্কতা জারি

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ০২
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারত থেকে বাঘ আসার খবরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলেছে বিজিবি।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের প্রধান পিলার ৮৬৮ নম্বরের ৩ নম্বর উপপিলারের একপাশে ভারতীয় কোচবিহার রাজ্যের মাথাভাঙ্গা থানার বালারহাট এলাকা এবং অন্যপাশে বাংলাদেশের লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ও জোংড়া ইউনিয়ন সীমান্তের মোহাম্মদপুর ককোয়াবাড়ী এলাকা। কাঁটাতারবিহীন ওই সীমান্ত এলাকার ভারতের প্রায় ৪০০ গজ অভ্যন্তরে বালারহাট এলাকায় পার্শ্ববর্তী বন থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে একটি বাঘ লোকালয়ে চলে আসে। এ সময় ভারতের স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা বাঘটিকে ধাওয়া দিলে বাঘটি পালিয়ে যায়। সীমান্তে বাঘ আসায় এই শোরগোলের খবর ভারতের ১৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের শ্রীমুখ ক্যাম্পের বিএসএফের টহল দলের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) নাজিরগোমানী ক্যাম্পের টহল দল জানতে পারে। এ ঘটনায় রাতে হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে সীমান্তবাসীদের সতর্ক থাকতে বলে বিজিবি।

এক সপ্তাহ আগেও ভারতের ওই গ্রামে দুটি বাঘ এসেছিল। স্থানীয় বন বিভাগের লোকজনের সহায়তায় একটি বাঘ আটক করা হয় এবং অপর বাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ককোয়াবাড়ী এলাকার আবেদা বেগম (৫৫) বলেন, ‘বিজিবি মাইকে বলেছে এটা শুনেছি। বাঘ দেখিনি, তবে এতে ভয় লাগে।’

একই এলাকার ওয়াদুদ হোসেন বলেন, ‘রাতের বেলা ভারতে চিল্লাচিল্লিতে আমরা খবর পাই বাঘ নাকি বের হয়েছে, পিটাপিটি (ধাওয়া) করেছে। ওই সময় শুনি বাঘ বাংলাদেশেও ঢুকতে পাড়ে। এতে এলাকাবাসী ভয় পেয়ে সতর্ক হয়।’

এ ব্যাপারে নাজিরগোমানী বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের (সিও) মোবাইল নম্বরে কল দিলে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে বিজিবির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, ‘বাঘ তো বাংলাদেশে আসেনি। কেউ দেখেওনি। সীমান্তে এ ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঘটনাটি তিলকে তাল বানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে, রাখা হবে হিমঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১১
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে। সেখানে হিমঘরে মরদেহটি রাখা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে হাদির মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-৫৮৫ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এ সময় হাদির মরদেহ নিতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ অন্যরা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত