বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব ঠেলাঠেলি তুঙ্গে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৪৭

একের পর এক জটিলতায় শিগগির ভোগান্তির শেষ হচ্ছে না বিদেশগামী বাংলাদেশিদের। প্রবাসীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো তার বাস্তবায়ন নেই। জায়গা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা বেধেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে। ফলে কবে বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব বসবে, জানা নেই কারও।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শর্তানুযায়ী, সে দেশে ঢোকার আগে বিমানবন্দরের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু দেশের কোনো বিমানবন্দরেই এ ব্যবস্থা নেই। ফলে কাজে ফিরতে পারছেন না কয়েক হাজার প্রবাসী।

বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়ে বেশ কয়েকবার আন্দোলনও করেন প্রবাসীরা। তাঁদের দাবির মুখে ৬ সেপ্টেম্বর এক সপ্তাহের মধ্যে ল্যাব বসানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

নির্দেশনা বাস্তবায়নে পিসিআর ল্যাব বসাতে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু কোথায় বসানো হবে, তা নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ল্যাব বসানোর জন্য পার্কিং ভবনের ছাদ নির্ধারণ করেছিল; কিন্তু তাতে আপত্তি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বলছে, খোলা জায়গায় ল্যাব বসানো সম্ভব নয়।

চলমান এই সংকট নিরসনে গতকাল মঙ্গলবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। দুই মন্ত্রী জানান, ছাদে ল্যাব স্থাপনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগে সাময়িকভাবে বিমানবন্দরেই ল্যাব বসাতে হবে। তবে কবে নাগাদ হতে পারে এবং পরীক্ষা চালু হতে পারে, সেটি জানাতে পারেননি কেউই।

প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, এটা তো এক সপ্তাহ আগে হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকায় একটু সময় লাগছে। তবে এটার আজ (মঙ্গলবার) একটা সমাধান হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছে পিসিআর টেস্ট। কিন্তু আমাদের দেশে র‍্যাপিড পিসিআর পরীক্ষার যন্ত্র নেই।

আগামী তিন দিনের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দরে পার্কিংয়ের ছাদ তৈরিতে সময় লাগবে ১০ দিন। কিন্তু ভেতরেও জায়গা আছে। সেখানেই আপাতত দু-তিন দিনের মধ্যে কাজ হবে। যারা কাজ করবে বলেছিল, তারা যদি এখন বলে যন্ত্র নেই, আমদানি করতে হবে, তাহলে আমি বলব বাড়িতে চলে যাও।’

এদিকে অনুমোদন পাওয়া সাত প্রতিষ্ঠানের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিকিউর (এসওপি) মানসম্মত কি না, তা যাচাই করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ইমরান আহমদ বলেন, ‘এটি সিভিল অ্যাভিয়েশনের কাজ। এটা তারা কোথায় পাঠিয়েছে, কোথায় ক্লিয়ারেন্স পাবে, সেই ভিত্তিতে সিভিল অ্যাভিয়েশন কাজ করে যাবে। আপাতত আরটি-পিসিআর ল্যাবের কাজ দিচ্ছি, পরে র‍্যাপিড পরীক্ষাও বিবেচনায় নেব।’

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কার্যক্রম শুরু হবে আশ্বস্ত করে জাহিদ মালেক বলেন, পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার, আবার সেই পরীক্ষাগার বসানোর জায়গা লাগবে। ল্যাব তো আর উন্মুক্ত জায়গায় বসানো যায় না। দ্রুত এটি বসানোর জন্য বিমানবন্দরের ভেতরে একটি জায়গা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত ছোট আকারে পরীক্ষাগার বসাবে।

আর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘পরীক্ষাগার স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকারিভাবে। এ কারণে নতুন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিকিউর আবার দিতে হবে কি না, আমি নিশ্চিত নই। বিমানবন্দরের ভেতরে জায়গা ছোট। পরীক্ষাগার বসানো হলে আমরা বুঝতে পারব, কটি বুথ বসিয়ে কতজনকে একসঙ্গে পরীক্ষা করা যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত