Ajker Patrika

শরীয়তপুরে আ. লীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষ: শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশসহ আহত ১৫

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, ২২: ৫১
শরীয়তপুরে আ. লীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষ: শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশসহ আহত ১৫

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে প্রায় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এতে ২ পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলা সদরের কীর্তিনাশা নদীর তীর ও ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর ওপর এই সংঘর্ষ হয়। আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাদশা শেখ ও তাঁর জামাতা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মোস্তফার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে নড়িয়া থানার উপপরিদর্শক ফরহাদ হোসেন ও কনস্টেবল জুয়েল ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন। এ ছাড়া ওই দুই পক্ষের আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাদশা শেখ মোক্তারের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তাঁর জামাতা মামুন মোস্তফা নড়িয়া কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গত জেলা পরিষদের নির্বাচনে মামুন মোস্তফা ও বাদশা শেখের ছেলে পৌরসভা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ শেখ সদস্য পদে নির্বাচন করেন। দুজনই নির্বাচনে পরাজিত হন। এর পর তাঁদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। 

জেলা পরিষদের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার জের ধরে বুধবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিক উপজেলা সদরের কীর্তিনাশা নদীর তীর ও ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর ওপর সংঘর্ষ শুরু হয়। ৩০ মিনিট ব্যাপী সংঘর্ষে দুই পক্ষ অন্তত শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। খবর পেয়ে পুলিশ শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আতঙ্কে নড়িয়া উপজেলা সদরের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। 

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মোস্তফা মোবাইলে আজকের পত্রিকা বলেন, ‘বাদশা শেখের লোকজন আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। আমার কর্মীরা তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় আমার ৮ জন কর্মী আহত হয়েছেন।’ 

দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেজানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাদশা শেখ বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই কাদির শেখের ছেলে মিলন শেখকে মারধর করা হয়। এর জের ধরে কিছু লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সংঘর্ষের সময় আমি ও আমার ছেলে ইউনুছ মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলাম।’ 

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে বাদশা শেখের ছেলে ইউনুছ ও জামাতা মামুন মোস্তফার মধ্যে বিরোধ চলছিল। তার জের ধরে বুধবার দুই পক্ষের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে। তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নড়িয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় প্রচুর পরিমাণ ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১০টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত