ঢাকার সিএমএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী জনি ৩ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০: ৫৭
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৪, ২১: ৩৬

নথি জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) খন্দকার মোজাম্মেল হক জনি ওরফে জনি খন্দকারকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

বিকেলে জনি খন্দকারকে আদালতে হাজির করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুমন চন্দ্র সরকার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে জনি খন্দকারের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকার সিএমএম আদালতের কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তৌহিদুল ইসলাম রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত বুধবার জনিকে আটক করা হয়। বেঞ্চ সহকারী জনি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৯–এ কর্মরত।

আদালত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা দুটি মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর জাল করে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশের জাবেদা নকলও সরবরাহ করা হয়েছে। পরে আবার এক মামলার আসামিকে একই নথির আগের আদেশ ছিঁড়ে ফেলে প্রবেশনে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই আদেশেও ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অনুসন্ধানের পর নথি জালিয়াতির ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিনি বেঞ্চ সহকারী জনি খন্দকারকে গতকাল বুধবার আটক করার নির্দেশ দেন। পরে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

ওই দিনই একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. নূরে আলম বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে তিনি বলেন, ‘আসামি জনি শেরেবাংলা নগর থানার এক মামলায় ২০২২ সালে ৯ মার্চ ও ২১ মার্চ দুইটি ভিন্ন আদেশ নথিতে লিপিবদ্ধ করেন। যাতে প্রদত্ত স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ বিচারকের নয়। বর্ণিত মামলায় বিগত ইং ২১/০৩/২০২২ তারিখের প্রচারিত আদেশে আসামি অহিদুজ্জামানকে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮–এর ২৪৯ ধারা অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে মুক্তির (প্রবেশন) আদেশ প্রদান করা হয়। 

‘উক্ত আদেশের স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ বিচারকের না হওয়া এবং উক্ত আদেশ বেঞ্চ সহকারী খন্দকার মোজাম্মেল হক কর্তৃক লিখিত হওয়ায় এটি সুস্পষ্ট হয় যে, তিনি বিজ্ঞ বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে বেঞ্চ সহকারী হিসেবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের বরখেলাপ করে বিজ্ঞ বিচারকের অগোচরে উক্তরূপ আদেশ প্রচার করেন।’

মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ যাত্রাবাড়ী থানার এক মামলার বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বিজ্ঞ বিচারকের আদালতে প্রেরণ করা হলে আসামি বিচারকের অগোচরে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল মামলার আসামি নাসির উদ্দিন ও আশিকুর রহমানকে প্রবেশন প্রদানের আদেশ কজলিস্ট ও কোর্ট ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেন। 

যদিও এইরূপ কোনো আদেশ বিচারক প্রচার করেননি। এমনকি নথিটি শুনানির জন্য বিচারকের কাছে উপস্থাপনও করা হয়নি। আসামি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এইরূপ ন্যক্কারজনক অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। 

এ বিষয়ে গত ৩০ জুন তারিখে তাঁকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলে তিনি গত ১ জুলাই নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে কারণ দর্শানোর জবাব প্রদান করেন। তাঁর লিখিত ব্যাখ্যা হতেও এটি সুস্পষ্ট যে তিনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এসব হীন অপরাধ সংঘটন করেছেন; যা চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা বিধিমালার পরিপন্থী।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত