সেতুর পাটাতন ভাঙায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে ৩০ হাজার মানুষ

মোহাম্মদ উজ্জ্বল, মহম্মদপুর (মাগুরা)
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৩৯

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া এলাকায় খালের ওপর ব্রিজের পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় ১২ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। আর মাঝের অংশের পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সেতুটি। 

এ ছাড়া এক পাশের রেলিং দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। রেলিং নির্মাণের রডগুলোও চুরি হয়ে গেছে। রেলিং ও ভাঙা সেতুতে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়েই স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী এই সেতু ব্যবহার করছে। যে কোন মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে সেতুটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। 

এলাকাবাসী জানান, ভাঙা সেতুর কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্কুলের শিক্ষার্থীসহ কৃষক ও রোগীরা। এই সেতু পার হয়ে এ অঞ্চলের কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যায়। অন্যদিকে কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে হলেও এই সেতু ব্যবহার করতে হয়। যানবাহন ভাঙা এই সেতু পার হতে চায় না। হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হয়। হাজারো মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ভাঙা সেতুটি দ্রুত মেরামতের দাবি তাঁদের। 

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার বড়রিয়া, মৌশা, নিখরহাটা, ছোটকলমধরী, শ্রীপুর, কলমধরী ও গোপিনাথপুরসহ ১২টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ব্রিজটি ব্যবহার করেন। তাদের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয় মোটরচালিত ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজি, নছিমন। ঝুঁকি নিয়েই ভাঙা সেতু পারাপর হয় প্রতিদিন। ফলে তাঁদের ভোগান্তি ও ব্যয় দুটোই বাড়ে। 

স্থানীয় কৃষক মো. গিয়াস ফকির ও ইদ্রিস আলী বলেন, ভাঙা সেতুর কারণে আমাদের কৃষিপণ্য নিয়ে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বাজারজাত করার সময় যানবাহন আসতে চায় না। এতে আমাদের খরচ ও দুর্ভোগ বাড়ে। তাই এই ভাঙা সেতুটি মেরামত হলে আমরা বেঁচে যেতাম। 

বড়রিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামিম মাহবুব বলেন, এই সেতুর জন্য হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকার কৃষক ও শিক্ষার্থীদের। বড়রিয়া গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু পারাপার হচ্ছেন। 

বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. পান্নু মোল্যা বলেন, এই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়ে চলাচল করে। এলাকার কৃষকেরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। জনসাধারণের কথা ভেবে আমি উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় এই সেতু মেরামতের বিষয়ে আলোচনা করেছি। 

মহম্মদপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আব্দুস ছাত্তার জানান, ভাঙা সেতুটি ভেঙে নতুন করে তৈরির জন্য উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তার মাধ্যমে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শনও করেছেন। শিগগির এ সেতুর কাজ শুরু হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত