হানিফের আসনে মনোনয়ন ফরম কিনলেন ব্যারিস্টার আমীর

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৪
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২১: ০৬

কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন খন্দকার রশীদুজ্জামান দুদু। তাঁর মৃত্যুর পর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান মাহবুব উল আলম হানিফ। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হওয়ার পর আসনটিতে নিজের অবস্থান পোক্ত করেন। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। 

যদিও মাহবুব উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের বাসিন্দা। জোটগত নির্বাচনের কারণে ওই আসন তাঁকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে ছেড়ে দিতে হয়। তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশের সুযোগই ছিল না অন্য কারও। 

তবে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। হেভিওয়েট এই মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। 

এ ছাড়া মনোনয়ন তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. এ এফ এম আমিনুল হক রতন, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনজুমান লাইলা বানু এবং ইউকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহাতাবুল হক জয়। 

খুলনা বিভাগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির জন্য গঠিত কমিটির সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. হাসান মেহেদী আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

স্থানীয়দের মতে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে নানা কারণে কুষ্টিয়া ছিল অবহেলিত জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বদলে যেতে থাকে এই জনপদের চিত্র। এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ, বাইপাস সড়ক, হরিপুর-কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু, মেডিকেল কলেজসহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দৃশ্যতই বদলে গেছে এলাকা। তাই সার্বিক বিবেচনায় নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মাহবুব উল আলম হানিফের কোনো বিকল্প নেই। 

ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসময়ে পাশে থাকেননি, তাঁর পক্ষে মামলা পরিচালনা না করে ফাইল ফেরত দিয়েছিলেন। এমন মানুষ কীভাবে মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়। তা ছাড়া জেলায় দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততাই নেই।’ 

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফারুক উজ জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাই যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন। শুধু এটুকু বলতে চাই হানিফ ভাই আবারও মনোনয়ন পাবেন এবং তাঁর নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।’ 

অন্যদিকে বহু বছর জেলার রাজনীতির সঙ্গে ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলামের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। সভা-সমাবেশে এমনকি রাজপথেও তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি ঢাকাতেই থাকেন। কুষ্টিয়া শহরের বাড়িতে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করেন। 

শহরের আহসান উল্লাহ সড়কে আমীর-উল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির সংস্কারকাজ চলছে। বাড়িকে নতুন রঙে সাজানো হচ্ছে। একসময় বাড়ির সামনে থাকা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টির দরজা-জানালারও মেরামত চলছে। 

এ সময় বাড়ির সংস্কারকাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরেই বাড়ির সংস্কারকাজ চলছে। ব্যারিস্টার সাহেব এখন ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করবেন।’ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়ির কাজ করছেন কি না—এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। 

এ বিষয়ে জানতে আমীর-উল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সংযোগ পাওয়া যায়নি। একই বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত