Ajker Patrika

যশোরে ইয়াসের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু, পরিস্থিতি তদারকিতে ৫৫ টিম

প্রতিনিধি
যশোরে ইয়াসের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু, পরিস্থিতি তদারকিতে ৫৫ টিম

যশোর: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সোমবার দিবাগত রাত থেকেই যশোরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, গতিপথ ভারতে থাকলেও এর একটি প্রভাব যশোরের ওপর পড়বে। এতে বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে যশোরের জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলার পাশাপাশি প্রায় দুই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম, স্বেচ্ছাসেবক ও শুকনো খাবার। পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করছে ৫৫টি কমিটি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই যশোরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাতে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। মঙ্গলবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যা আরও দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ ভারতের ভবিষ্যৎমুখী হলেও সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় যশোরে এর প্রভাব থাকবে। ফলে ওই সময়ে জেলার ওপর দিয়ে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। গত বছর আম্পানে যশোরের ওপর দিয়ে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। যা গত দু’দশকে যশোরের সর্বোচ্চ গতিসীমার ঝড়। এবার ইয়াস যদি শেষমেশ তার গতিপথ পরিবর্তন করে, তবে তা আম্পানের গতিসীমাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এদিকে সার্বিক বিবেচনায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা সদরসহ বাকি ৭টি উপজেলায়ই খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। যেহেতু যশোর উঁচু স্থান। এখানে ঝড়-বন্যা তুলনামূলক কম হয়। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র সেভাবে গড়ে তোলা হয়নি। তবে মনিরামপুরের মুজিব কেল্লাসহ এরই মধ্যে জেলার ১ হাজার ৮১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। ৮টি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসাকে আশ্রয় কেন্দ্রের আওতায় আনা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ২৮৯টি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫২২ টি।

সদর উপজেলায় বিদ্যালয় ভবনে আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৪৮ টি, বাঘারপাড়ায় ১৪৮, শার্শায় ১৯০, কেশবপুরে ২২৮, মণিরামপুরে ৩৮৪, চৌগাছায় ১৮৮, ঝিকরগাছায় ১৭৮, অভয়নগরে ১৭২টি। এর বাইরে আরও প্রায় ১০০টি খালি ভবন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থার উঁচু ভবনকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে শুকনো খাবার হিসেবে রুটি, বিস্কুট, খাবার স্যালাইনসহ জরুরি ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে।

কাজী সায়েমুজ্জামান আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা সংক্রান্ত ভার্চ্যুয়াল প্রস্তুতি সভায় ৫৫টি উপকমিটি করে কাজ বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। গোটা পরিস্থিতি তদারকি করবে এই কমিটিগুলো। এ ছাড়া জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং রেড ক্রিসেন্টের সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরও কাজ করবে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যশোর স্বাস্থ্য বিভাগও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, এরই মধ্যে জেলার ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কন্ট্রোল রুম ও জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি চিকিৎসক দল কাজ করবে। প্রয়োজনে এসব টিমের সদস্যরা ইউনিয়ন পর্যায়ে গিয়ে ইয়াসে অসুস্থ লোকের জন্য কাজ করবেন। এ জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি ওষুধ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত