গরম ডালে পড়া ‘কথা’ আর ফিরল না

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ২১: ৪৪

গরম ডালের গামলায় পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হওয়া দেড় বছরের কৌশানী মণ্ডল কথা না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে। টানা ১২ দিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কাটিয়ে আজ সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে ছোট্ট এ শিশু। 

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের কাঁচড়াহাটি নন্দিগ্রামের শ্যামলী মণ্ডল ও ব্রজমোহনের একমাত্র সন্তান কথা। শুরুতে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও পরক্ষণেই তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রোববার রাতে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। তবে সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে সোমবার সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে। 

কথার কাকা অনাথ মণ্ডল জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে কথা রান্না করা ডালের গামলার মধ্যে পড়ে যায় কথা। চুলা থেকে ডাল নামিয়ে তার মা পানি আনতে যাওয়ার ফাঁকে মেয়েটি খাবারের প্লেটে ডাল নিতে গেলে গরম গামলার মধ্যে পড়ে যায়। কথার চিৎকারে দ্রুত এসে উদ্ধার করলেও মাথার বাম পাশ ও বুকসহ গলা ও বাম হাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চামড়া উঠে যায়। 

কথার শ্যামলী মণ্ডল বলেন, ‘আমার বুকের ধনের আর কখনো ডাল খাওয়ার ইচ্ছা হবে না। ডাল খাওয়ার জন্য প্লেট নিয়ে এলেও সেই ডাল তার আর খাওয়া হলো না।’
 
শিশুটির পিতা ব্রজমোহন মণ্ডল বলেন, ‘অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে অ্যান্টিবায়োটিকের ধকল সহ্য করতে না পেরে রোববার রাতে পেট ফুলে ওঠার পর থেকে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সোমবার দুপুরের আগে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’ 

শ্যামনগর থানা-পুলিশের সহায়তায় মরদেহ নিয়ে তাঁরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলেও জানান মেয়েটির বাবা। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, শিশুটির মর্মান্তিক দুর্ঘটনার বিষয়টি ঢাকায় জানালে তাঁরা মরদেহ ছেড়ে দেয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত