শৈলকুপায় আ.লীগের দুই পক্ষে দ্বন্দ্ব, কেটে ফেলা হলো ৪০ বিঘা জমির কলাগাছ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৪, ২০: ৪৭
Thumbnail image

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ২৫ জন কৃষকের ৪০ বিঘা জমির কলাগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, যোগীপাড়া গ্রামের আব্দুল হান্নানের সমর্থকদের সঙ্গে রইচ উদ্দিন কমান্ডার ও মতিয়ার মণ্ডলের সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছে। দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের সমর্থক। গত উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। গতকাল শুক্রবার রাতে আব্দুল হান্নানের সমর্থকদের কলাগাছ কেটে ফেলা হয়। তাতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনার পর থেকে গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা, রাস্তায় পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। মাঠের পর মাঠ কলাগাছের কাটা অংশ মাটিতে পড়ে আছে।

ওই গ্রামের কৃষক শাহীন আলম বলেন, ‘সকালে মাঠে এসে দেখি, আমার দেড় বিঘা জমির কলাগাছ কে বা কারা কেটে দিয়েছে। দুই দিন আগেও আমি জমিতে সার দিয়েছি। কিছুদিন পরই গাছে কলা আসা শুরু করত। কিন্তু আমার গাছগুলো কেটে দিয়েছে।’

একই গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের মাঠে অন্তত ২৫ জন কৃষকের জমির ১৫-১৬ হাজার কলাগাছ কেটে নষ্ট করে দিয়েছে। এই গ্রামে আমাদের সামাজিক দ্বন্দ্ব আছে। সেই দ্বন্দ্বের কারণেই আমাদের ফসলের ক্ষতি করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এত বড় ক্ষতি করেছে যা পূরণ হবে না। রইচ কমান্ডার আর মতিয়ারের লোকজন আমাদের এই ফসল নষ্ট করেছে। আমাদের সঙ্গে শত্রুতা থাকতে পারে, তাই বলে আমাদের ফসল নষ্ট করবে? আমরা এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’

কেটে ফেলা হলো ৪০ বিঘা জমির কলাগাছকৃষক গঞ্জের আলী বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে আমাদের একজন ফোন দিয়ে বলে, রইচ উদ্দিন কমান্ডারের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করে কিছু লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে বের হয়েছে। এ খবর শুনে অনেকে সরে পড়ে। অনেকে আবার বাড়ি থেকে বের হয় না। পরে সকালে দেখি, আমাদের মাঠের কলাগাছ কেটে ফেলেছে। আমি অসুস্থ মানুষ, কোনো ঝামেলার মধ্যে থাকি না। সামান্য কলার আবাদ ছিল, ওরা সেটুকুও কেটে দিল।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মতিয়ার মণ্ডল বলেন, ‘আমার ওপরে যে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার লোকজনও এ কাজ করেনি। যারা আমার ওপর অভিযোগ দিচ্ছে, তারা আমার সমাজের লোকদের বিভিন্ন সময় মারধর করে আসছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমিত কুমার বর্মণ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, সামাজিক আধিপত্য বিস্তারের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। এলাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত