Ajker Patrika

পদত্যাগ না করায় যবিপ্রবি ভিসির বাসভবনে তালা দিল শিক্ষার্থীরা

যশোর প্রতিনিধি
পদত্যাগ না করায় যবিপ্রবি ভিসির বাসভবনে তালা দিল শিক্ষার্থীরা

পদত্যাগ না করায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রশাসনিক ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ভিসিসহ তার অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন ঘোষণা করেন তারা। 

আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। 

এর আগে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ উপাচার্যের অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি শুরু করে। দ্বিতীয় দিন (বুধবার) বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে উপাচার্যকে শনিবারের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ শুরু করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা। সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে ভিসির বাসভবন ও প্রশাসনিক কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি আনোয়ার স্বৈরাচারী কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনো কাজ নেই যে, তিনি অনিয়ম–দুর্নীতি করেননি। এই দুর্নীতি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চক্র তৈরি করেছেন।’ 

তারা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে যারা প্রতিবাদ করেছে, সেই শিক্ষক, কর্মচারী–শিক্ষার্থীদের তিনি গোয়েন্দা সংস্থার লোক, পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও নাজেহাল করেছেন। তাই গত দুদিন আগে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছি আমরা। তবে সেই আল্টিমেটামের পরেও তিনি পদত্যাগ না করায় আজ তালা এবং শাটডাউন ঘোষণা করেছি।’ 

পদত্যাগ না করায় যবিপ্রবি ভিসির বাসভবনে তালা দিল শিক্ষার্থীরাপরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, আমরা স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট ভিসি চাই না, কারণ উনি কখনোই শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য ছিলেন না। আমরা উপাচার্যসহ সব দালাল সিন্ডিকেটকে বলতে চাই, আপনারা সসম্মানে পদত্যাগ করুন।’ 

ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসান বলেন, ‘এই ক্যাম্পাসে যে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী যারা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন তাদেরও সসম্মানে পদত্যাগের দাবি জানাই। শিক্ষার্থীদের পূর্ণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় তাই, আমরা এই ক্যাম্পাসে কোন ধরনের রাজনীতি চাই না।’ 

অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদ বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদেরও ছেড়ে দেব না, যারা ডিনস্ কমিটিতে বসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকেরা আধিপত্য দেখায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীরা রাজপথে তাদের আধিপত্য দেখাবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারও বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির খোঁজ পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেবে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুর্নীতিবাজ ভিসি এবং শিক্ষকেরা আপনারা সসম্মানে পদত্যাগ করুন।’ 

এই বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে পদত্যাগের বিষয়ে তার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ তিনি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক। ভর্তি প্রক্রিয়ার ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি ৩ শতাংশ শেষ করতে পারলে দায়মুক্ত হবেন। এরপর কী করবেন ভেবে দেখবেন। তবে সরকার চাইলে তিনি ভেবে দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত