পদত্যাগের দাবিতে যবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ 

যশোর প্রতিনিধি
Thumbnail image

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গত কয়েক দিন ধরে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

এ সময় কোষাধ্যক্ষ–রেজিস্ট্রারেরও পদত্যাগের দাবি জানানো হয়, পদত্যাগ না করলে তাদের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। এ ছাড়া পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. আব্দুর রশিদও।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ও উপাচার্যের একান্ত সচিবের পদত্যাগ পত্রের কপি পেয়েছি। প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ পত্র এখনো আমার কাছে আসেনি।’

অপরদিকে সহকারী প্রক্টর মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি।’

এর আগে দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনসহ তাঁর অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলে ভিসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবন ও ডরমিটরি ঘুরে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি আনোয়ার স্বৈরাচারী কায়দায় এই বিশ্ববিদ্যালয় চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনো কাজ নেই তিনি অনিয়ম–দুর্নীতি করেননি। দুর্নীতি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে যারা প্রতিবাদ করেছে, সেই শিক্ষক–কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীদের গোয়েন্দা সংস্থার লোক ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছেন তিনি।’

পদত্যাগের দাবিতে যবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাবক্তারা আরও বলেন, ‘গত দুদিন আগে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম আমরা। সেই আল্টিমেটামের পরেও তিনি পদত্যাগ না করায় তার প্রশাসনিক ভবনে তালা এবং শাটডাউন ঘোষণা করেছি। তিনি দ্রুত পদত্যাগ না করলে আমরা আরও বৃহৎ কর্মসূচি হাতে নিব।’

পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশ থেকে স্বৈরাচার দূর করতে পারলেও ক্যাম্পাস থেকে এখনো দূর করতে পারিনি। আমাদের এই ভিসির কাছে কোনো দাবি নেই, কারণ এই স্বৈরাচার দালালের কাছে কোনো প্রকার দাবি আমরা রাখতে চাই না। তাই আমাদের এই আন্দোলনের একটাই দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচার ভিসি, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতি সভাপতিসহ দালালদের পদত্যাগ করতে হবে।’

এই বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেনি। তবে কর্মসূচির একদিন আগে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে পদত্যাগের বিষয়ে তার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ তিনি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক। ভর্তি প্রক্রিয়ার ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি তিন শতাংশ শেষ করতে পারলে দায়মুক্ত হবেন। এরপর কী করবেন ভেবে দেখবেন। তবে সরকার চাইলে তিনি ভেবে দেখবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত