Ajker Patrika

খেতের পাকা ধান শ্রমিকের সংকটে নষ্ট হওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষক

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ৫২
খেতের পাকা ধান শ্রমিকের সংকটে নষ্ট হওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষক

পাইকগাছায় শ্রমিকের সংকটে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান। এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও স্বস্তিতে নেই কৃষক। অতিরিক্ত দামেও মিলছে না ধান কাটা শ্রমিক। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে, এ বছর ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর। কিন্তু এ বছর ৫ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত ১ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উফশী ৪ হাজার ৫০ হেক্টর ও ১ হাজার ৫৭২ একর জমিতে হাইব্রিড চাষ হয়েছে। হরিঢালী ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ৯৪৫ হেক্টর, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০ হেক্টর, লতা ইউনিয়নে ১ হেক্টর, সোলাদানা ইউনিয়নে ১ হেক্টর, গদাইপুরে ১ হাজার ২৪০ হেক্টর, রাড়ুলী ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫ হেক্টর, চাঁদখালী ইউনিয়নে ১ হাজার ৯০ হেক্টর, দেলুটি ইউনিয়নে ৭০ হেক্টর, গড়ইখালী ইউনিয়নে ২০ হেক্টর ও পৌরসভায় ১৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। 

রাড়ুলী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হান্নান শেখের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বছর দুই একর জমিতে বোরো ধান চার করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে এ বছর জমিতে ভালো ধান হয়েছে। পোকার আক্রমণ একটু বেশি থাকলেও অতিরিক্ত বিষ ছিটাতে খরচ একটু বেশি হয়েছে। তার পরেও খুশি ছিলাম। কিন্তু এখন শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে না পারায় ধানের শিষ ভেঙে মাটিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা দিয়েও কোনো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ শ্রমিক ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছেন। আমি ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’ 

একই সংকটের কথা উল্লেখ করে গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, ‘আমি বছরে দুবার জমিতে ধান লাগিয়ে ১০ সদস্যের সংসার চালাই। এবার আমার সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে ভালো ধান হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকে সংকটে ধান ঘরে তুলতে পারছি না।’

উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের অবস্থা প্রায় একই রকম। শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান খেতে পড়ে রয়েছে। যথাসময়ে ধান কাটতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। এদিকে আবহাওয়া বৈরী ও বৃষ্টি হলে আরও বিপাকে পড়ার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। 

চাঁদখালী ইউনিয়নের কৃষক কাঁটাবুনিয়ার বিধান চন্দ্র রায় বলেন, পাঁচ একর জমিতে ধান লাগিয়েছি। এক একর জমির ধান কাটতে পারলেও শ্রমিকের অভাবে বাকি ধান কাটতে পারিনি। আবার পত্রপত্রিকায় দেখছি, ঈদের দিন থেকে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এত খরচ করে ধান লাগিয়ে শ্রমিকের অভাবে ধানগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।’ 

পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে ধান পেকে গেছে। এ কারণে সব জমিতে একই সময়ে ধান কাটার শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ শ্রমিক এলাকার বাইরে কাজ করার কারণে এই সংকট দেখা দিতে পারে। তবে ঈদের পরে শ্রমিক পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন। তখন শ্রমিকের মুজুরিটাও কমে আসবে বলে তিনি জানান। এমন ঘটনা প্রতিবছর হয়ে থাকে। তবে ১০ দিন যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, তাহলে উপজেলার ৯০ শতাংশ ধান কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত