বন্ধুত্ব নষ্ট হবে বলে বিয়ে করেননি শ্যামল-সারোয়ার

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৫৬
Thumbnail image

গোলাম সারোয়ার আর শ্যামল দত্তের বয়স এখন ৬০–এর কাছাকাছি। দু–এক বছরের ছোট বড় হলেও তাঁরা বন্ধু। এই বন্ধুত্ব কিশোর বয়স থেকেই। একই এলাকায় একই জল-হাওয়ায় শৈশব থেকেই তাঁরা বেড়ে উঠেছেন গলাগলি করে। দুই ধর্মের দুই বন্ধুর। এই বন্ধুত্ব গত ৮০-এর দশক থেকে নানা চড়াই–উতরাই পার করেছে। এসব কোনো কিছুই তাঁদের নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের পথে বাধা হতে পারেনি। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নে এই দুই বন্ধু এখন সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হয়ে গেছেন। এই বন্ধুত্বের গুণগান এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে।

প্রায় ৬০ বছর হয়ে গেলেও শ্যামল ও সারোয়ার এখনো অবিবাহিত। অনেকেই দাবি করেন—বন্ধুত্বের পথে কেউ যেন বাধা না হতে পারে, সে জন্যই এখনো বিয়ে করেননি এই দুজন। তাঁরা ভাবেন, বিয়ে করলে সংসারকে সময় দিতে হবে। ফলে বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাঁদের চিরকুমার থাকা নিয়ে অনেকে হাসি-ঠাট্টা করলেও বন্ধুত্বের নিদর্শন দিতে গিয়ে এই দুজনের নামই সবাই প্রথমে টানছেন।

স্থানীয়রা জানান, শ্যামল-সারোয়ার একসঙ্গে একটি দোকানও চালান। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই ব্যবসা পরিচালনা করলেও কখনো এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়নি। সব সময় একসঙ্গে থেকেও নিজ নিজ ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন তাঁরা।

এই বন্ধুত্ব নিয়ে বাবুখালী ইউনিয়নের ২৫ বছর বয়সী তরুণ হালিম মিয়া বলেন, ‘আমি কাকাদের বন্ধুত্ব দেখছি ছোটবেলা থেকেই। অথচ আমার যারা বন্ধু ছিল তাদের অনেকই এখন নাই, যোগাযোগ রাখে না। তাই কাকাদের বন্ধুত্বকে সবাই সম্মানের চোখে দেখে। এখনকার বন্ধুত্ব বেশি দিন টিকে না। অথচ এই দুজন কত আলাদা!’

বয়স বাড়লেও গোলাম সারোয়ার এবং শ্যামল দত্ত এখনো সময় পেলেই তরুণ বয়সের মতো মোটরসাইকেলে ঘোরাঘুরি করেন। শেষ জীবন পর্যন্ত তাঁরা বন্ধু হয়েই থাকতে চান। তাঁদের বন্ধুত্ব যেন মানুষের সম্পর্ক ভালো রাখার অনুপ্রেরণা হয়—এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত