মাগুরায় মশা নিধনে কোনো উদ্যোগ নেই, অতিষ্ঠ মানুষ

মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ৩৬
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ৩৬

মাগুরায় মশার যন্ত্রনায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ । এমনকি ব্যবসায়ীরাও ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছেন না। মশা নিধনে কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই বলে দুর্ভোগ বেড়েছে পৌরসভা থেকে ইউনিয়নে বসবাসকারীদের। 

প্রায় ১৭ লাখ মানুষের বসবাস এই জেলায় শহর থেকে পৌরসভার সবখানে সাম্প্রতিক সময়ে  মশার উৎপাত বেড়েছে। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও মশার কামড়ে পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে বলে ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে।

মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ( সরকারি কলেজ) একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাতুল মুন্সি বলেন, ক্লাস রুমে বসে মনযোগ থাকে না মশার কামড়ে। 

জিনিয়া সুলতানা নামে কলেজ হোস্টেলে থাকা এক শিক্ষার্থী জানায় সন্ধ্যা শুধু নয়। দিনেও মশার উৎপাত। পড়তে গেলে কয়েল ধরিয়েও কাজ হয় না। এমনকি হোস্টেল এলাকা পরিষ্কার থাকলেও কোথা থেকে মশার মিছিল আসে সেটাও বুঝতে পারি না।

সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হাকিম বলেন, মশা সবখানেই বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাহত যেন না হয় সেজন্য কলেজ ক্যাম্পাসও নিয়মিত পরিষ্কার রাখা হয়। তারপর কলেজের বাইরে খোলা ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকায় সেখান থেকে মশা কলেজে আসতে পারে। পৌরসভা উদ্যোগ নিলে হয়তো শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমবে।

এদিকে মাগুরা পৌরসভার আবালপুর, ভিটেসাইর, পারনান্দুয়ালী, কলেজপাড়া ও পুরাতন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশকিছু ড্রেনের মুখে ঢাকনা নেই। শহরের বকশি মার্কেটের পেছনে ও ম্যাটারনিটি হাসপাতালের পাশে রয়েছে পরিত্যাক্ত দুটি পুকুর। 

ব্যবসায়ী জুয়েল হাসান বলেন, কোনোভাবেই দোকানে বসে ব্যবসা করা যায় না। কাস্টমার আসলেও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারে না শুধু মশার কামড়ে। কয়েল ধরাই তাও কোনো কাজ হয় না। পৌরসভা আগে কিছু উদ্যোগ নিতো কিন্তু এখন নেই। 

নতুন বাজার থেকে প্রকৌশলী শম্পা বসু জানান, শহরের খোলা ড্রেন, ময়লা যত্রতত্র পড়ে থাকা মশার প্রজনন বাড়িয়ে দেয়। ফলে সেখানে নিয়িমিত  পৌরসভার অভিযান নেই বলে শহরবাসী মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ।

তবে পৌরসভার ফগার সুপারভাইজার (মশক নিধন) ফরাজানা ইতি অভিযান চলছে না এটা সঠিক নয় বলে  জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে মশা নিধনে অভিযান চলছে। নিয়মিতভাবে পৌর এলাকার ৯ টি ওয়ার্ডে এ অভিযান চলমান। এছাড়া শহরের কোথাও ময়লা নেই বলেও জানান তিনি।

একই দুভোগে শহর থেকে দূরে ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে।জেলার ৩৬ টি ইউনিয়নের কোথাও মশা নিধনে কোন উধ্যোগ নেই বলে নানা সূত্র থেকে জানা গেছে।হাজরাপুর ইউণিয়নের ইছাখাদা এলাকার আছাদ শেখ জানান,গ্রামে তো কোনদিন মশা নিধনে কোন উদ্যোগ দেখিনি। তবে আগের থেকে মশার কামড় খুব বেশি বেড়েছ। দিনেও রাতে বাড়িতে কিয়বা বাজারে টিকা মুশকিল।

সদরের আলমখালীর বাসিন্দা আবু বক্কার জানান, বাড়িতে এতো মশা আগে দেখিনি। মশার কামড়ে গরুর খামারে খুব ঝামেলা হচ্ছে। অবলা জীব মশার কামড়ে খুব যন্ত্রনা পায়। প্রতিদিন কয়েল ধরালে খরচও বেড়ে যায়।

মশা নিধনে ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো উদ্যোগ আপাতত নেই বলে জানান হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়াম্যান কবির হোসেন। তিনি বলেন, আমার এলাকার মানুষদের বলেছি বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে। আর উপজেলা পরিষদ মিটিংএ আমিসহ প্রায় সব চেয়ারম্যান মশা নিধনে উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি। দেখা যাক কতদূর কী করা যায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত