টেন্ডার নিয়ে ধস্তাধস্তি: বিএনপি নেতাকে শোকজ, যুবদল নেতা বহিষ্কার

­যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৪৫
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ২০
এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলু। ছবি: সংগৃহীত

টেন্ডার নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিএনপি নেতা এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলুকে শোকজ করা হয়েছে। তা ছাড়া যুবদল নেতা হাবিবুল্লাহকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পাঁচ কোটি টাকার চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহের টেন্ডারের সব কাজ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন জেলা বিএনপির সদস্য এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলু। এ কারণে তাঁর নেতৃত্বে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর রশিদকে লাঞ্ছিত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত করার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জেলা বিএনপি বিষয়টি নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য মনে করে এবং এর তীব্র নিন্দা জানায়।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক বা ঠিকাদারি কাজে কেউ অনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলে সে ব্যক্তি দলের যেকোনো স্তরের নেতা বা কর্মী হোক, তাঁর বিরুদ্ধে দল কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুল্লাহকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময় সেখানে উপস্থিতির বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলুকে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। তদন্তে তাঁর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে দল কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।’

টেন্ডার নিয়ে ধস্তাধস্তি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
টেন্ডার নিয়ে ধস্তাধস্তি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিগত পতিত সরকারের টেন্ডার ও দখলবাজির কারণে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। বিএনপি কোনো রকম টেন্ডার ও দখলবাজি সমর্থন করে না। তাই বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ন্যূনতম সংশ্লিষ্ট হন, তাহলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থার আওতাভুক্ত হবেন।’

দলের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজীবন সংগ্রামী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের পরিবারের কোনো সদস্য ঠিকাদারি করেন না। বরং রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে সব প্রকার দখলদারির বিষয় তিনি কঠোরভাবে দমন করেছেন, যা যশোরবাসী জানে। অতএব, যশোর জেলা বিএনপি সব ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল ও থাকবে। এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলু প্রয়াত বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের শ্যালক।’

শোকজের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এ কে শরফুদ্দৌলার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘ঘটনার পর আমি আর আইনি কোনো পদক্ষেপে যাইনি। দুজনের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।’ তবে এর আগে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, ‘তাঁরা ক্ষমতাধর লোকজন। আমাদের কিছুই করার নেই। কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি। তবে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত