পাট কাটা ও জাগ দেওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা

প্রতিনিধি, খোকসা (কুষ্টিয়া) 
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২১, ১১: ২০
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১২: ০২

কুষ্টিয়ার খোকসায় পাট কাটা ও জাগ দেওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। আজ রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে উপজেলার বেশির ভাগ কৃষক হয় পাট কাটছেন, না হয় জাগ দিচ্ছেন। তাঁরা জানান, ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই সোনালি আঁশ বাজারে উঠতে শুরু করবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের চাষ করেছেন চাষিরা। সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে জানিপুর ইউনিয়নে, ৯০০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মোট ২৮টি কৃষি ব্লকে এবার পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আমবাড়িয়া ইউনিয়নে ২৫৮, গোপগ্রাম ইউনিয়নে ১৭০, জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নে ৪৭০, শোমসপুর ইউনিয়নে ৩৪০, খোকসা ইউনিয়নে ১৪০, পৌরসভায় ৯৫, শিমুলিয়া ইউনিয়নে ৭৩৫, ওসমানপুর ইউনিয়নে ৪১০ ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নে ৮৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

শিমুলিয়া ইউনিয়নের বসুয়া গ্রামের কৃষক জলিল উদ্দিন বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ১৪ থেকে ১৫ মণ পাট হবে। এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার কাজ চলছে। বাজারে পাট বিক্রি শুরু হয়নি। তাই দাম কেমন হবে বোঝা যাচ্ছে না। যদি সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়, তবেই আমরা পাট চাষে লাভবান হতে পারব।’

উপজেলার জয়ন্তীহাজরার কৃষক রমজান আলী। এবার তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার চাষিরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। এতে পাটের আবাদ বেড়েছে। অপরদিকে, অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে।'

একই এলাকার কৃষক লিয়াকত আলী জানান, কৃষকদের তুলনায় বেশি লাভ করেন পাট ব্যবসায়ীরা। গরিব হওয়ায় কৃষকেরা পাট উঠলেই তা বিক্রি করে দেন। তাই তুলনামূলক কম দাম পান চাষিরা। এবার তুলনামূলক পাটের বেশি আবাদ হয়েছে। 

কথা হয় চন্দনীর পাইকারি পাট ব্যবসায়ী দিলীপ বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, মাসখানেকের মধ্যেই বাজারে পাট আসতে শুরু করবে। তিনি আশা করছেন, গতবারের মতো চাষিরা এবারও পাটের ভালো দাম পাবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, ‘উপজেলার পাটচাষিদের আধুনিক উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কৃষকদের বিনা মূল্যে পাটবীজ-সার ও প্রণোদনা দেওয়ায় তাঁরা আগ্রহভরে পাটের আবাদ করেছেন।’

সবুজ কুমার সাহা বলেন, পাটজাতপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারে পাটের দাম যথাযথ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা পাট আবাদে এগিয়ে এসেছেন। যার ফলে উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা থেকেও সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত