মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

মুজিবনগর (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২২, ১১: ৫১

মেহেরপুরের মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফায় কাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেভাবেই পড়ে আছে অভয়াশ্রমটি। শুধু তাই নয়, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরি করা হয়েছে। পরে গোপনে বিল তুলে নেওয়ারও চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

মেহেরপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ-২ (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মাছের অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিলের টুপলার অংশে প্রায় এক হেক্টর জলাশয়ের ওপর মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী কুষ্টিয়ার রেজাউল হক নামে এক ঠিকাদারকে অভয়াশ্রম তৈরির কাজ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয় মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাজমুস শাকিবকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারিনি ঠিকাদার। পরে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরি করে কাজ শেষ বলে দাবি করে ঠিকাদার।

বিলের উপকারভোগী শ্রী আনন্দ হালদার বলেন, ‘অভয়াশ্রম তৈরিতে নির্ধারিত আয়তনের চার ভাগের একভাগ কাজ হয়েছে। আমরা বারবার বলার পরও সঠিকভাবে কাজ করেনি টিকাদার। সেই সঙ্গে কাজের ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিসেরও তেমন কোনো তদারকি ছিল না।’ 

দাদপুর বিলের টুপলার অংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির জন্য ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি মোটা ও ১৫ ফিট উচ্চতার ১২টি আরসিসি পিলার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে কম ও নিম্নমানের। এ ছাড়া ১৯ ফিট সাইজের ১ হাজার ৯০ পিস বাঁশ এবং তেঁতুল, বরই, আম ও জাম গাছের ডালপালা ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে ৭ থেকে ৮টি কম উচ্চতার বাঁশ ও বিলের আশপাশের ঝোপঝাড়। লাল ফ্লাগ দেওয়ার কথা ১০০ পিস, দেওয়া হয়েছে ৬০ পিস।

অভিযোগের বিসয়ে জানতে ঠিকাদার রেজাউল হকের মোবাইলে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি পুনরায় অভয়াশ্রমটি যেদিন তৈরি করতে পারব, সেদিন করব। 

অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের কথা স্বীকার করে মুজিবনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। সঠিকভাবে কাজটি হয়নি দেখে পুনরায় অভয়াশ্রমটি তৈরির নির্দেশ দিই। কিন্তু ঠিকাদার অসুস্থ থাকায় এখনো কাজ শেষ হয়নি।

মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকোনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারের কাজের বিল দেওয়া বন্ধ রেখেছি। সঠিকভাবে কাজ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত