খোকসায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২১, ১২: ১৯
আপডেট : ২৪ জুন ২০২১, ১২: ৫৬

খোকসা (কুষ্টিয়া): গেল বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার কুষ্টিয়ার খোকসায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এ বছর পাট চাষে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। বিগত বছরগুলোতে লাভ না হলেও গত বছর পাট বিক্রি করে ভালো দাম পান তাঁরা। আগে যে পাট ৬০০–৭০০ টাকা মণ বিক্রি করতেন, গত বছর সেটা ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে জানিপুর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে প্রায় ৯০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।

উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মোট ২৮টি কৃষি ব্লকে এবার পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আমবাড়িয়া ইউনিয়নে ২৫৮, গোপগ্রাম ইউনিয়নে ১৭০, জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নে ৪৭০, শোমসপুর ইউনিয়নে ৩৪০, খোকসা ইউনিয়নে ১৪০, পৌরসভায় ৯৫, শিমুলিয়া ইউনিয়নে ৭৩৫, ওসমানপুর ইউনিয়নে ৪১০ ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নে ৮৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

খোকসা পৌরসভার মাঠপাড়ার কৃষক এমদাদুল হক বলেন, প্রথমদিকে তীব্র খরার কারণে এবার পাট চাষে কৃষকের খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, `এ বছর দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত দুই বিঘা জমিতে চারবার সেচ দিতে ৮ হাজার টাকা, জমি লাঙল চাষ করতে ২ হাজার টাকা, রাসায়নিক সার কিনতে ২ হাজার ২০০ টাকা, বীজ কিনতে ১৭৫ টাকা ও জমি নিড়ানি দিতে শ্রমিক মজুরি বাবদ ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

শিমুলিয়া ইউনিয়নের বসুয়া গ্রামের চাষি জুব্বার আলী বলেন, আমি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পাটের চাষ করি। তবে দাম ভালো না পাওয়ায় অনেকে চাষ ছেড়েই দিয়েছিল। গত বছর আমি মাত্র এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। ভালো দাম পেয়েছি। ১ হাজার ৭০০ টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর আমি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি।

একই এলাকার কৃষক নূর হোসেন বলেন, পাটচাষিদের তুলনায় বেশি লাভ করেন ব্যবসায়ীরা। চাষিরা গরিব হওয়ায় পাট উঠলেই তা বিক্রি করে দেন। তাই তুলনামূলক কম দাম পান তাঁরা। তবে গত বছর পাটের দাম ভালোই ছিল। সে জন্য এবার চাষও বেশি হয়েছে।

ওসমানপুর ব্লকের মাঠকর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, কৃষকেরা যে ফসলে লাভ পান, সেটি চাষে আগ্রহ দেখান। গত বছর দাম ভালো হওয়ায় তাঁরা পাটের চাষ ঝুঁকছেন। পাটের বিভিন্ন রোগ ও পোকা দেখা দিলে আমরা মাঠে গিয়ে তাঁদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন, পাটচাষিদের আধুনিক উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিনা মূল্যে পাটবীজ-সার ও প্রণোদনা দেওয়ায় কৃষকেরা পাটের আবাদ করেছেন। এ ছাড়া পাটজাতপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারে পাটের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা পাট চাষে এগিয়ে এসেছেন। ফলে উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা থেকেও সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত