Ajker Patrika

কুষ্টিয়ায় যুবকের ৯ টুকরা লাশ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৫

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ১৩
কুষ্টিয়ায় যুবকের ৯ টুকরা লাশ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৫

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় এক যুবকের ৯ টুকরা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহসংলগ্ন পদ্মার চরের ছয়টি স্থানে পুঁতে রাখা লাশের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, চাঁদার দাবিতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতার নেতৃত্ব এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

নিহত যুবকের নাম মিলন হোসেন (২৪)। তিনি জেলার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহিরমাদি গ্রামের মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ই-ব্লকের ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

আটক পাঁচজনের মধ্যে আছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সহসভাপতি এস কে সজীব। বাকি চারজনের পরিচয় পুলিশ জানায়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মিলন হোসেনের লাশের ৯ টুকরা উদ্ধারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন অভিযানে থাকা কুষ্টিয়ার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেব আলী।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ জানান, গত ৩১ জানুয়ারি সকালে মিলন বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী মুমো খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। 

পলাশ কান্তি বলেন, ‘মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে প্রথমে মিলনের এক বন্ধুকে আটক করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে, আরেক বন্ধু সজীবের নেতৃত্বে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে সজীবসহ আরও চারজনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মিলনকে হত্যা করে লাশ টুকরো করে নদীর চরে পুঁতে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন।’ 

গতকাল রাত ২টার দিকে আটক ব্যক্তিদের নিয়ে হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ পদ্মা নদীর চরে পুলিশ অভিযানে যায় বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘রাতভর অভিযান চালিয়ে নদীর চরের ছয়টি স্থান থেকে মিলনের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র বাধবাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’ 

মিলন হোসেনের লাশের টুকরা উদ্ধারের জন্য আটক ব্যক্তিদের পদ্মার চরে নিয়ে যায় পুলিশ। আজ শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকাপুলিশ সুপার বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, টাকার দাবিতে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতরা সবাই একে অপরের পরিচিত। মিলন বাড়ি থেকে অনলাইনে কাজ করতেন। নিখোঁজের দিন তাঁকে মোবাইল ফোনে ডেকে হাউজিং এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। ওই দিন রাতেই তাঁকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করার সুবিধার্থে ধারালো অস্ত্র দিয়ে টুকরো করে নদীর চরে পুঁতে রাখা হয়েছিল। আর এই পুরো হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁরই বন্ধু সজীব। এর সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না, তা নিয়ে আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ 

স্থানীয় লোকজন জানান, এস কে সজীব কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভাঙচুর ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। সেই মামলায় কারাগারে ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর নামে চাঁদাবাজিসহ বেশ কিছু মামলাও রয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজিং এলাকার কয়েক বাসিন্দা জানান, সজীবের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়। মিলন নামে যাকে হত্যা করা হয়েছে, তিনিও তাঁদের মতোই ছিলেন। তাঁদের কাজ ছিল ছেলে-মেয়েদের ব্ল্যাকমেল করে চাঁদা দাবি করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত