বাগেরহাটে দুপক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে আ.লীগ নেতা নিহত 

বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৪, ২২: ০৩
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ৪৬

বাগেরহাটের চিতলমারীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালীন আহত হলে তাঁকে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কাননচক বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

নিহতের নাম মোজাফফর হোসেন খান (৬৬)। তিনি কাননচক গ্রামের বাসিন্দা এবং চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় তানভীর আহম্মেদ মাটি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হিজলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার বিবাহিত মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া রয়েছে এমন অভিযোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কাননচক গ্রামের সজীব খান নামের এক যুবককে তুলে নিতে আসেন হিজলা এলাকার কাজী শাহেদসহ কয়েকজন। এ সময় কাননচক গ্রামের লোকজন একজোট হয়ে কাজী শাহেদসহ তুলে নিতে আশা লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে। পরে কাজী শাহেদের নেতৃত্বে তারা হিজলা এলাকায় ফিরে যায়।’ 
 
তিনি আরও বলেন, ‘পরে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীন ও আওয়ামী লীগের নেতা লিটন কাজীর নেতৃত্বে দেড় শ থেকে দুই শ লোক কাননচক গ্রামে আসে। তখন কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদশা মিয়া শেখের নেতৃত্বে কাননচক এলাকার লোকজন এক হয়। তখন দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। এ সময় গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর খানকে টুঙ্গিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’ 

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর হোসেন খানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেন স্থানীয়রাসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। 

নিহতের জামাতা স্বাধীন শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। পারিবারিকভাবে আলোচনা করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হবে।’ 

কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদশা মিয়া শেখ বলেন, ‘হিজলার লোকজন ঝামেলা করার জন্য ঢাল-সড়কি নিয়ে এসেছিল। পুলিশের সামনেই ঘটনা ঘটেছে। আমি উত্তেজনা থেমে যাওয়ার পরে এসেছি।’ 

ঘটনার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা লিটন কাজী ও হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীনের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। 

আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর হোসেন খানের মৃত্যুর খবরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে স্থানীয়রাসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাএদিকে খবর শুনে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নারীঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দুই পক্ষকে শান্ত করে। পরে দুই পক্ষ যার যার স্থানে চলে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন নিহত ব্যক্তিকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছিল। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।’ 

ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত