ময়মনসিংহের ভালুকায় রাখিয়া সুলতানা রিয়া (১৫) নামে নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মুখোশধারী যুবক। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা বাটাজোর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিয়া ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন। 

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাটাজোর দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রশিদের মেয়ে ও বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী রাখিয়া সুলতানা রিয়া। এক বছর আগে টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার মাওশা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রিপন মিয়ার সঙ্গে রিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছেলে বিদেশ চলে গেলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজন রিয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে ৬ মাস আগে রিয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। 

আজ সোমবার দুপুরে রিয়া স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। স্কুলে যাওয়ার পথে মুখোশধারী এক যুবক তাকে পিছন থেকে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় রিয়া জীবন রক্ষার্থে চিৎকার দিয়ে দৌড়াতে শুরু করলে ওই যুবক পেছন থেকে রিয়ার ঘার, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে পাশের ধান খেতে ফেলে যায়। 

খোঁজ পেয়ে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন রিয়াকে উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

রিয়ার মা মাজেদা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক বছর আগে সখিপুর উপজেলার মাওশা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রিপন মিয়ার সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দেই। বিয়ের পরদিনই মেয়ের স্বামী বিদেশ চলে যায়। এরপর রিয়ার শাশুরি মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। এমনকি কয়েলের আগুন দিয়ে হাত পুড়িয়ে দেয়। পরে মেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসে। কিন্তু স্বামীর বাড়ির লোকজন বারবার চেষ্টা করলেও শ্বশুর বাড়ির নির্যাতনের ভয়ে সে যেতে রাজি হয়নি। এরই জের হিসেবে তার মেয়েকে স্বামীর বাড়ির লোকজন কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ ধান খেতে ফেলে যায়। মেয়ের হত্যাকারীর বিচার দাবি করছি।’ 

ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডা. রাকিব হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটি মারা গেছে। নিহতের ঘাড়, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’ 

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’