ত্রিশালে দেওয়ানবাগ শরিফে হামলা ও ভাঙচুরের চেষ্টা  

ত্রিশাল(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯: ৪৪
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০: ৪৭

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গোপালপুরে বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরিফে পাঁচ শতাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা ও ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে। এ সময় প্রতিরোধের মুখে পড়ে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে তারা আজ রোববার সকালে এই হামলার চেষ্টা চালায়।

এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন অংশ নেয়। এ সময় তারা দেওয়ানবাগ শরিফের প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালালে ভেতরে থাকা হাজারো ভক্ত ভেতর থেকেই মরিচের গুঁড়া স্প্রে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলাই দিয়ে মার্বেল নিক্ষেপ ও গরম পানি ছোড়ে। বাইর থেকেও এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ভেতরে থাকা লোকজনের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা উত্তেজিত হয়ে মূল ফটকের বাইরে থাকা তাদের কন্ট্রোল রুমে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠিপেটা করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেওয়ানবাগ শরিফে হামলা হতে পারে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সেখানে মোতায়ন করা হয়। এলাকাবাসী হামলা চালাতে চাইলে আমরা তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

জানা গেছে, দেওয়ানবাগ শরিফে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হয় বলে তা গুঁড়িয়ে দিতে দুই দিন আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ এলাকাভিত্তিক ব্যাপক প্রচার করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এই হামলার চেষ্টা হয়।

জানতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

স্থানীয় রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ‘ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এলাকাবাসী ভণ্ড পীর দেওয়ানবাগীর ওপর অনেক আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। আজকে সকালে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে এই দরবার উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছি।’

দেওয়ানবাগ শরিফের মিডিয়া সেলের কো-অর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, ‘হামলায় তাঁদের ১২০ জন আহত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দরবার পরিচালনা করে আসছি। আমাদের দেওয়ানবাগী হুজুরের মূল শিক্ষায় হলো মানবতার শিক্ষা। আমরা কাউকে আঘাত করিনি। এভাবে চলতে থাকলে তো টিকা যাবে না। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আমরা আগে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানাব, তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ 

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত