Ajker Patrika

ধীর গতির কাজে ভোগান্তি বেড়েছে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মে ২০২৪, ১৮: ০২
ধীর গতির কাজে ভোগান্তি বেড়েছে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে

নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহের জিরো পয়েন্ট থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ। এ বছরের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী চার–পাঁচ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্নের মাধ্যমে চলাচলের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে। 

২০২১ সালের জুন মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মধুপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক (এন–৪০৩) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নতিকরণ প্রকল্পের অনুমোদন পায়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে মুক্তাগাছার সত্রাশিয়ার রকিব ফিলিং স্টেশন থেকে ভাবকীর মোড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক রয়েছে। ময়মনসিংহের জিরো পয়েন্ট থেকে মুক্তাগাছার বাইপাস সড়ক হয়ে মধুপুর পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটারের ১৮ ফুটের সড়কটি ৩৪ ফুটে প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। 

মাসুদ হাইটেক বিল্ডার্স, রিলায়েবল বিল্ডার্স ও সালেহ আহমেদ এন্টারপ্রাইজ এই তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাইপাস নির্মাণে কাজ করছেন। 

সরেজমিন দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট থেকে টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট করা হলেও কাজ শুরু হয়নি। জেলা থানার সামনের কিছু অংশ কাজ বাকি রয়েছে, সত্রাশিয়া থেকে ভাবকীর মোড় বাইপাস রোডের অর্ধেক অংশের মাটি পুরো ভরাট হলেও বাকি অর্ধেক অংশের অধিগ্রহণের টাকা পুরোপুরি না দেওয়ায় উচ্ছেদ, মাটি ভরাট কাজ সম্পন্ন হয়নি। এ ছাড়া ৪৭ কিলোমিটারের বেশ কয়েক জায়গায় কাজ অসম্পন্ন থাকায় বৃষ্টি হলে কাদা এবং রোদে ধুলোবালির কারণে ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে ভোগান্তি নিরসনের দাবি স্থানীয়দের। 

মুক্তাগাছার ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কচক লাঙ্গলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, ‘মুক্তাগাছা শহরের বুক চিরে গেছে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এ সড়ক দিয়ে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের সঙ্গে সড়ক সংযোগ গড়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের সব বিভাগের। এ কারণে মুক্তাগাছার ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে থাকে। এতে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় মুক্তাগাছা শহরে। যানজট নিরসনে মুক্তাগাছাবাসীর দীর্ঘদিনর দাবি ছিল একটি বাইপাস সড়কের। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের ভোগান্তি বেড়েছে।’ 

একই এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাইপাস সড়কটি আমাদের গ্রামের মাঝখান দিয়ে গেছে। এই সড়কের অর্ধেক অংশে মাটি ভরাট সম্পন্ন হলেও বাকি অর্ধেক অংশে অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় কাজ ধীর গতিতে চলছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। মনে হচ্ছে কাজ শেষ হতে আরও এক বছর লাগবে।’ 

নগরীর খাগডহর এলাকার বাসিন্দা কাশেম আলী বলেন, ‘ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক নির্মাণ হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষ চলাচলের নতুন গতি পাবে। তবে এখন নির্মাণকাজ চলমান থাকলেও অনেক জায়গায় কাজ অসম্পন্ন থাকায় ধুলো আর কাদার মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দায়িত্ব নিয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করলেই ভালো হয়।’ 

ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইলগামী প্রান্তিক সুপার বাসের চালক সোহেল রানা বলেন, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কে কাজের মান খুব একটা ভালো হচ্ছে না। কাজ অসম্পন্নের পাশাপাশি ফিনিশিং ভালো হয়নি। তদারকি বাড়িয়ে দ্রুত কাজ শেষ হলে সবার জন্য ভালো হয়। 

একই বাসের যাত্রী শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার কাজ চলছে তো চলছেই; মনে হচ্ছে এ নিয়ে কারও কোনো দায়িত্ব নেই। কোটি কোটি টাকার কাজে তদারকি না থাকলে মান নিয়ে তো প্রশ্ন থেকেই যায়?’ 

ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি শংকর সাহা বলেন, ‘ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের শত শত গাড়ি প্রতিদিন চলাচল করে। এই রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ হলে চলাচলে স্বস্তির পাশাপাশি অনৈতিক অবস্থা চাঙা হবে। 

এ বিষয়ে মাসুদ হাইটেক বিল্ডার্সের প্রডাকশন কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র বলেন, ‘আমাদের অংশের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বালুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে কিছুটা বেগ পোহাতে হচ্ছে। তাই হয়তো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কাজ সম্পন্ন করতে একটু বেশি সময় লাগবে।’ 

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, কাজ দ্রুত শেষ করে মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। তারাও আন্তরিকভাবে কাজ শেষ করতে তৎপরতা চালাচ্ছে; ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে নানা কারণে কাজ শেষ করতে আরও চার-পাঁচ মাস সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত