পশু কোরবানির সরঞ্জামের বিক্রি কম, দুশ্চিন্তায় কামারেরা

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৩, ১৬: ২৫

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে কামারপাড়ায় চিরচেনা সেই ব্যস্ততা এবার নেই। ঈদের আগে যেখানে কামারদের দিন-রাত ব্যস্ত থাকার কথা, সেখানে এখন উল্টো চিত্র। আগের তুলনায় এবার চাহিদা কম থাকায় সেই ব্যস্ততা নেই। নতুন করে বানিয়ে রাখা কোরবানির সরঞ্জাম বিক্রি নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা। তবে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বাড়বে বলে তাঁরা আশা করছেন।

কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরশহরের কর্মকারপট্টি এলাকায় দুই শতাধিক পরিবার কামার পেশার সঙ্গে জড়িত। সারা বছর দা, কোদাল, কাঁচি, কুড়াল, লাঙলের ফলাসহ লোহায় নির্মিত সামগ্রীগুলো তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে কোরবানির ঈদে ব্যবহৃত ছুরি, চাপাতি, বটি ও দা তৈরি করে বাড়তি আয় হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর কোরবানির ঈদে ভালো ব্যবসা হলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। এবারের ঈদে নতুন অস্ত্রের চাহিদা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কামারেরা।

আজ সোমবার সকালে পৌরশহরের কর্মকারপট্টি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অর্ধশতাধিক কামারশালায় অলস সময় পার করছেন কামারেরা। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কোরবানিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করে সাজিয়ে রাখ হয়েছে। তবে ক্রেতার দেখা নেই ৷ পুরোনো অস্ত্র শাণ দেওয়া ও অস্ত্র মেরামত করার জন্যও নেই কামারদের ব্যস্ততা। এতে কেউ দোকান খুলে রেখে পাশে কোথাও আড্ডায় মেতেছেন। কেউ আবার শেষ মুহূর্তে চাহিদা বাড়ার আশায় তৈরি করছেন নতুন অস্ত্র।

একটি কামারশালার কারিগর আমির হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির ঈদে প্রতি দোকানেই কয়েকজন করে কারিগর থাকত ৷ কিন্তু এবার তো অস্ত্রের তেমন চাহিদা নেই। এই কামারশালাতেই অন্যান্য বছর পাঁচ-ছয়জন কারিগর কাজ করলেও এবার আমি একাই কাজ করছি।’

কর্মকারপট্টির একটি দোকানে কোরবানির সরঞ্জাম বানাচ্ছেন কারিগরেরাশান্ত কর্মকার বলেন, ‘সারা বছর টুকটাক বেচাকেনা হয়। তবে আমরা আশায় থাকি ধান কাটার সময় কাঁচি আর কোরবানির ঈদের সময় অস্ত্র বিক্রি নিয়ে ৷ এখন ধান কাটার মেশিন নামায় কাঁচির চাহিদা কমে গেছে। আর এবার তো অস্ত্রের চাহিদা নেই বললেই চলে।’

একটি কামারশালার মালিক সাধন কর্মকার বলেন, ‘আগে কোরবানির ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে ব্যস্ত সময় পার করতাম আমরা। তখন কাজ শেষ করতে বাড়তি কারিগরও প্রয়োজন হতো। তবে এ বছর তেমন কোনো কাজ নেই। তাই অলস সময় পার করতে হচ্ছে আমাদের।’

আরেকটি কামারশালার মালিক হারাধন কর্মকার বলেন, ‘বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়লেও কামার শিল্পের পণ্যগুলোর দাম তেমন বাড়েনি। তারপরও ক্রেতা কেন কম বুঝতে পারছি না। তবে ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বাড়তে পারে বলে আশা করছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত