ময়মনসিংহের ত্রিশালে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আরেক বাসের ধাক্কায় ছয়জন নিহতের ঘটনায় ‘রাব্বি-সেতু’ বাসের চালককে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মো. ওবায়দুল্লাহ (২০)। তিনি ত্রিশাল উপজেলার মো. সুর্য্যত আলীর ছেলে।

বুধবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ত্রিশাল উপজেলার বাগান এলাকা থেকে ওবায়দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলেন—ত্রিশাল উপজেলার কাঠাল গ্রামের আতিকুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন আক্তার (২৮), একই উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে খাইরুজ্জামান লিটন মিয়া (৩২), ওই উপজেলার রাগামারা গ্রামের আহেদ আলীর ছেলে সোহেল মিয়া (৩০), সদর উপজেলার চুরখাই এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৫) ও জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মেহেক মুন্সির ছেলে আলতাব হোসেন (৬০)। অপর এক নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।

• ত্রিশালে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আরেক বাসের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৬ 

নিহতদের মধ্যে আলতাব হোসেন গাজীপুরে কসাইয়ের কাজ করতেন আর বাকিরা ভালুকায় বিভিন্ন গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। 

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বলেন, শেরপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এস এস ট্রাভেলসের একটি বাস ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় আসতেই চাকা বিকল হয়ে যায়। পরে বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চাকা সারানোর চেষ্টা করে। এরই মধ্যে এই বাসের কয়েকজন যাত্রী অন্য একটি বাসকে সিগনাল দিয়ে দাঁড় করায়। এ সময় রাসেল স্পিনিং মিলের রাব্বি-সেতু বাস এসে সিগনাল দিয়ে দাঁড় করানো যাত্রী ও বাসে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় একজনের ও পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

মাইন উদ্দিন বলেন, এ দুর্ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহতদের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।  

• ৩ দিনের ব্যবধানে ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ পোশাকশ্রমিক নিহত

রাব্বি-সেতু বাসটি পোশাককর্মীদের বহন করত। বাসটির মালিকানা আবু হানিফ শিকদারের নামে। তিনি বলেন, চার বছর আগে বাসটি তিনি ঢাকার একজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফিটনেস না থাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। বাসটির চাপায় ছয়জন নিহতের ঘটনায় তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন। 

বিআরটিএ ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি) এ. এস. এম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। গাড়ির রোড পারমিট বা অন্যান্য কাগজপত্র ছিল কিনা যাচাই করা হয়নি। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তবুও সড়কে চললে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

নিহতদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাস্টি বোর্ড থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।