ময়মনসিংহে বিদ্যুতায়িত হয়ে মা-ছেলের অঙ্গহানি, ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিচার দাবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ১৯: ১৪
আপডেট : ২৮ মে ২০২৪, ১৯: ৫৭

ময়মনসিংহে নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনতলার ছাদ ঘেঁষে স্থাপিত ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক হাত হারিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে আনন্দমোহন কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী দেবরাজ কর বৃত্ত (১৭)। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে রূপালী কর হারিয়েছেন বাঁ পায়ের চারটি আঙুল। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিচার দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ভুক্তভোগী দেবরাজ কর বৃত্তের বড় ভাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেবব্রত কর তীর্থ। পঙ্গুত্ববরণ করা দেবরাজ নগরীর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি কানাডাপ্রবাসী লেখক কেশব করের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে তীর্থ বলেন, ‘আমার বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর সহপাঠী মারিয়া হক স্বর্ণার বাসা ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর শাহী মসজিদ এলাকায়। গত ১১ এপ্রিল আমিসহ আমার মা রূপালী কর, বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি, ছোট ভাই দেবরাজ কর বৃত্তকে নিয়ে ঈদের দাওয়াতে স্বর্ণাদের বাসায় যাই। সেখানে দুপুরে খাওয়ার পর স্বর্ণা আমার বড় বোন প্রাপ্তি ও ছোট ভাই বৃত্তকে নিয়ে তাদের তিনতলা বাসার ছাদে ছবি তুলতে যায়। সেখানে পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের বিপজ্জনক লাইনে বিদ্যুতায়িত হয় আমার ভাই দেবরাজ কর বৃত্ত। এ সময় বৃত্তকে বাঁচাতে গিয়ে মা গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় চিকিৎসকেরা আমার ভাইয়ের ডান হাত এবং মায়ের পায়ের চারটি আঙুল কেটে ফেলেন। তাঁরা বর্তমানে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।’

এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কোতোয়ালি মডেল থানায় বাসার মালিক মনিফা বেগম ও তাঁর মেয়ে মারিয়া হক স্বর্ণার নাম উল্লেখসহ পিডিবির অজ্ঞাতপরিচয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করে দেবব্রত কর তীর্থ একটি মামলা করেন।

মামলার বাদী দেবব্রত কর তীর্থের অভিযোগ, ‘বিল্ডিং কোড অমান্য করে নির্মাণ করা বাসার তিনতলার ছাদ ঘেঁষে নিয়মবহির্ভূতভাবে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন নির্মাণ করায় এবং বাসার মালিকপক্ষ আমাদের সতর্ক না করে ছাদে নিয়ে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।’

দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার আসামি ও বাসার মালিক মনিফা বেগম বলেন, ‘তারা আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে আমার দায় আছে বলে মনে করি না। তবে প্রথম পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের লাইনটি আমার ছাদের কোমর সমান উঁচু দিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগ একটি অ্যাঙ্গেল ব্যবহার করে ওই লাইন আমার ছাদের ছয় ইঞ্চি দূর দিয়ে নেয়। ওই দুর্ঘটনার পর লাইনটি তিন-চার ফুট দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়।’

জানতে চাইলে পিডিবি ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (উত্তর) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, দুর্ঘটনার পর ওই লাইন দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণ করার কারণে ছাদ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন স্থাপন করা হয়েছিল। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এ ঘটনায় দায়ী কে তা এখনই বলা যাবে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত