ময়মনসিংহে জোড়া খুন: সাবেক এসপি ও পৌর মেয়র বেকসুর খালাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ৫১
ময়মনসিংহে জোড়া খুন মামলার রায় শুনতে আদালত প্রাঙ্গণে ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের নান্দাইলে পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে গুলিতে দুজন নিহত হওয়ার মামলায় সাবেক আলোচিত পুলিশ সুপার কোহিনূর মিয়া ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবরিনা আলী তাঁদের খালাস দেন।

আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) পি এস এম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ৬ মাস ৩ দিন পর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাবেক আলোচিত পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়া ও পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নান্দাইলে ২০০৪ সালের ৫ মে আচারগাঁও হাই স্কুল কেন্দ্রে পৌর নির্বাচনে ভোট চলছিল। এ সময় দু-পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে সুজন ও আবু তাহের নামের দুজন মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে নান্দাইল থানায় মামলা করে। পুলিশ মামলাটি কয়েক দফা তদন্ত করলেও আসামি শনাক্ত না হওয়ায় প্রথমে ৩১ আগস্ট ২০০৪, দ্বিতীয়বার ১৯ ডিসেম্বর ২০০৪ ও সর্বশেষ ২২ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

নান্দাইল পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে হেরে যাওয়ায় ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পর পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, নান্দাইলের সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরী, সাবেক পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়া, পৌর মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলসহ ছয়জনের নামে দুই বছর ১১ মাস পর ২৫ মার্চ ২০০৭ সালে আদালতে পুনরায় মামলা করেন।

আদালতের নির্দেশে নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন মামলা পুনঃতদন্ত করে প্রমাণ না পাওয়ায় ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরে ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর ভিকটিম সুজনের বাবা ও তাহেরের স্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরেরই ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ করেন।

তদন্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া নারাজি দিয়ে পরের বছরের ১৮ মার্চ জেলা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেন। পরে জেলা জজ আদালতের বিচারক মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ইসমাইল হোসেন ১১ সালের ৩ জুলাই এসপি কোহিনুর মিয়া ও নান্দাইল পৌরসভার মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলের নামে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

দীর্ঘ ২০ বছর ৬ মাস ৩ দিন চলাকালে আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাবেক আলোচিত পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়া ও পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, আতাউর রহমান মুকুল ও এমএ হানান্ন খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল।

নান্দাইলের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বল রায় শুনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর পর আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’ অপর আসামি এসপি কোহিনুর মিয়া পলাতক রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত