আশ্রয়ণের ঘরে মারা গেলেন জাপার সাবেক সংসদ সদস্য জজ মিয়া

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২১: ৪২
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২২: ০২

জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক জজ মিয়া মারা গেছেন। আজ বুধবার ভোররাতে গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক জজ মিয়া বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 

জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পালিত মেয়ে নাজুকে ১৯৭২ সালে বিয়ে করেন এনামুল হক জজ। পরে ১৯৮৩ ও ১৯৮৬ সালে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

সালাউদ্দিন আহম্মেদ আরও বলেন, তিনি তৃতীয় স্ত্রী রুমার সঙ্গে ১০ বছরের ছেলে নুরে এলাহীকে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করতেন। প্রথম স্ত্রী নাজু এক মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা হক ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজীপাড়ায় দুই সন্তান নিয়ে দুটি বাড়িতে থাকেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ওঠার আগে তিনি একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন।

একসময় অনেক ক্ষমতা ও অর্থের মালিক থাকলেও তাঁর জীবনের শেষ সময়টুকু কেটেছে কষ্টে। খাট কেনার সামর্থ্য ছিল না। থাকতেন সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের মেঝে। এক বছর আগে সরকার জজ মিয়াকে এই ঘরটি উপহার দেয়।

তাঁর স্ত্রী রুমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গফরগাঁও পৌর শহর ও ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়ি ছিল জজের। সহায় সম্পদ যা ছিল, সবই তিনি তাঁর আগের স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন। আগের দুই সংসারের সন্তানেরা প্রাচুর্য দেখলেও আমার সন্তান নুরে এলাহী দেখেছে দারিদ্র্য। মানবতার খাতিরে এই লোকটির সঙ্গে আমি দীর্ঘ বছর কাটিয়েছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুক।’

রুমা আক্তার আরও বলেন, ‘সর্বশেষ গফরগাঁও পৌর শহরের ১২ শতাংশ জমি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে গৃহহীন হয়ে যান জজ মিয়া। তখন থেকে এক কক্ষের ভাড়াবাসায় আমরা থাকতাম। খাট কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেঝেতেই ঘুমাতে হতো। পরে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরটি আমাদের উপহার দেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত